Home / চুলের যত্ন / চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত? এই সমস্যা দূর করুন এখনই!

চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত? এই সমস্যা দূর করুন এখনই!

মাথার সামনের চুল কমে টাক পড়ে যাচ্ছে, আগের মতো ঘন চুল আর নেই, চুল(Hair) পড়তে পড়তে মাথা ফাঁকা হয়ে গেল!” – এসব কমন সমস্যার কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি, তাই না? আমরা নিজেরাও অনেকে এক্সেস হেয়ার ফলের প্রবলেম নিয়ে চিন্তিত। চুল পড়া(Hair loss) সমস্যা ঠেকাতে বাহারি সব হেয়ার ফল শ্যাম্পু,(Shampoo) ঘরোয়া প্যাক ট্রাই করে ফেলি, কিন্তু তাতেও যেন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। আগে আমাদের বুঝতে হবে কেন চুল পড়ছে, কীভাবে যত্ন নিলে চুল পড়া স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে, সঠিক হেয়ার কেয়ার(Hair care) প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার গুরুত্ব কতটুকু এবং বয়স অনুযায়ী চুলের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলো কী কী। চুল পড়া(Hair loss) নিয়ে দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে কেন অতিরিক্ত হেয়ার ফল হচ্ছে এবং সঠিকভাবে যত্ন নেওয়ার প্রসিডিউর কী, সেদিকে ফোকাস করুন। চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করুন এখনই!চুল পড়া

চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত? এই সমস্যা দূর করুন এখনই!

চুল পড়ার সম্ভাব্য কারণ সমূহ
আমরা জানি যে, ডেইলি ১০০-১৫০টি চুল পড়া(Hair loss) স্বাভাবিক। কিন্তু যখনই অতিরিক্ত চুল পড়ে, চুলের গোছা পাতলা হয়ে যায়, মাথার সামনে টাক পড়তে থাকে- তখনই আমাদের টনক নড়ে। অনেকের মুখেই শুনেছি যে, প্রতিদিন নিয়ম করে চুল ধোঁয়া, কন্ডিশনার(Conditioner) লাগানো, তেল দিয়ে ম্যাসাজ করা সবই তো করছি, কিন্তু মাথার চুল সব পড়ে যাচ্ছে! চুলের জন্য বেসিক কেয়ারটুকু করার পরও হেয়ার ফলের সমস্যা হতে পারে, এর পেছনে কী কী ফ্যাক্টর দায়ী সেটা আগে জেনে নিন।

১) চুল পড়া(Hair loss)  আরম্ভ করলে টেনশন শুরু হয়, আর এতে আরও বেশি চুল ঝরতে থাকে। স্ট্রেস, আনহেলদি লাইফ স্টাইল, রাত জাগা, পুষ্টিকর(Nutritious) খাবার না খাওয়া- এগুলো এক্সেস হেয়ার ফলের অন্যতম কারণ।

২) এন্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়াো- এটি হরমোনাল ইমব্যালেন্সের জন্য হয়ে থাকে। নারী ও পুরুষের টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যার পেছনে এটি অনেকাংশেই দায়ী।

৩) অনেক সময় ওষুধের সাইড-ইফেক্টে ভয়াবহ মাত্রায় চুল পড়তে থাকে। বার্থ কন্ট্রোল পিল, কোলেস্টেরল কমানোর মেডিসিন, ব্রণের ট্রিটমেন্টে যেসব ওষুধ(Medicine) ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে, অ্যান্টি ডিপ্রেশন ড্রাগ ইত্যাদি মেডিসিন অনেকদিন ধরে গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদী হেয়ার ফলের প্রবলেম হতে পারে।

৪) পর্যাপ্ত পরিমানে প্রোটিন ডায়েটে না রাখলে এবং শরীরে ভিটামিন(Vitamins) ডেফিসিয়েন্সি হলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়ে।

৫) চুলের গোঁড়ায় ঘাম জমে থাকলে, মাথা অপরিষ্কার রাখলে, নিম্নমানের প্রোডাক্ট ব্যবহারে বা কোনো প্রোডাক্ট স্যুট না করলেও এক্সেস হেয়ার ফলের প্রবলেম হতে পারে।

এইসব কারণে অতিরিক্ত চুল(Hair) পড়তে পারে। আপনাকে আগে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, কেন আপনার এক্সেস হেয়ার ফলের সমস্যা হচ্ছে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন এবং সঠিকভাবে চুলের যত্ন নেওয়া শুরু করুন। তো চুল পড়া(Hair loss) রোধে কীভাবে হেয়ার কেয়ার করা যায়, সে বিষয়ে এখন আমরা জানবো।

টিনেজে চুল পড়া সমস্যা
টিনেজে চুল ন্যাচারালি সুন্দর থাকে। কিন্তু ঠিকঠাক যত্নের অভাবে অনেক সময় চুল ভেঙ্গে যায়, আগা ফেটে যেতে পারে, চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে হেয়ার ফল হতে পারে। অপুষ্টিজনিত কারণে এই সময়ে অতিরিক্ত চুল(Hair) পড়তে পারে। আবার হরমোনাল কারণে বয়সন্ধিকালে এই প্রবলেম অনেকেই ফেইস করে থাকে।

এর প্রতিকার কী?
কীভাবে আপনার টিনেজ সন্তানের চুলের যত্ন(Hair care) নিবেন বা আপনি নিজেই যদি টিনেজার হয়ে থাকেন, তাহলে কীভাবে হেয়ার কেয়ার করবেন, সেটা আমরা এখন জেনে নিব।

১) সপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে পরিস্কার করবেন। সালফেট ফ্রি, প্যারাবেন ফ্রি অর্থাৎ ক্ষতিকর কেমিক্যালমুক্ত, হারবাল উপাদানযুক্ত মাইল্ড শ্যাম্পু(Shampoo) ইউজ করবেন। খুব বেশি ঘষাঘষি করা যাবে না স্ক্যাল্পে, এতে চুলের গোঁড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

২) ভেজা চুল বাঁধা যাবে না। এই বয়সে হিট স্টাইলিং টুলস যতটা সম্ভব এভোয়েড করবেন।

৩) ক্যাস্টর অয়েল(Castor oil), ভিটামিন-ই ক্যাপসুল, খাঁটি নারিকেল তেলের মিশ্রণ দিয়ে সপ্তাহে অন্তত ২ বার অয়েল ম্যাসাজ করবেন। মিনারেলস, প্রোটিন, অ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত ক্যাস্টর অয়েল নতুন চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করে এবং ভিটামিন ই(Vitamin E) হেয়ার ফলিকলে পুষ্টি যোগায়। নারিকেল তেল চুলের ইমিউনিটি ঠিক রেখে চুলকে নারিশ করে।

৪) অতিরিক্ত চুল পড়া(Hair loss) মোকাবেলায় দারুণ কাজ করে স্কিন ক্যাফে হেয়ার ফল ট্রিটমেন্ট প্যাকটি। সপ্তাহে ১ দিন টকদই(Sour yogurt), ডিম ও প্যাক মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিটের জন্য। এতে থাকা শিকাকাই, আমলা, হেনা, হিবিসকাস পাউডার চুলের যত্নে অতুলনীয়। টিনেজরা নির্ভয়ে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারবেন।

কেন তরুণ বয়সে চুল পড়ে?
কলেজ বা ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা অনেকসময় ব্যস্ততার জন্য চুলের যত্ন নিতে পারেন না। চুলের গোঁড়ায় ধুলো ময়লা আর ঘাম জমে গোঁড়া দুর্বল হয়ে পড়ে, সেই সাথে চুলও নিষ্প্রাণ দেখায়। খাদ্য তালিকাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন, প্রোটিন(Protein) না থাকলে অতিরিক্ত চুল পড়ার(Hair loss) সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে রেগুলার লাইফের স্ট্রেস, কম ঘুমানো, বাইরের পল্যুশন এগুলোও দায়ী আপনার এক্সেস হেয়ার ফলের জন্য।

এর সমাধান কী?
এই সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়া(Hair loss) কীভাবে কমাবেন, সেটি জেনে নিন তাহলে।

১) স্ক্যাল্প পরিস্কার রাখতে হবে যাতে ময়লা, খুশকি(Dandruff) না জমতে পারে। নিয়ম করে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ইউজ করুন। কন্ডিশনার যাতে চুলের গোঁড়ায় না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

২) তেল লাগানোর সময় নখ যাতে স্ক্যাল্পে না লাগে, আঙুলের সাহায্যে আলতোভাবে ম্যাসাজ করবেন। নারিকেল তেলের সাথে অলিভ অয়েল(Olive oil) মিক্স করে চুলের গোঁড়ায় মালিশ করুন সপ্তাহে ২-৩ দিন। এতে হেয়ার ফলিকলে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, চুলের গ্রোথ ভালো হবে, চুল পড়া(Hair loss) কমবে।

৩) সপ্তাহে অন্তত ১ দিন হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। আমলা পাউডার, হেনা, ডিম, অ্যালোভেরা জেল, লেবুর রস(Lemon juice), স্কিন ক্যাফে হেয়ার ফল ট্রিটমেন্ট প্যাক, টকদই কিনবা হাতের কাছে যেই উপাদানগুলো আছে তা দিয়ে মাস্ক বানিয়ে নেওয়া যায়। চুল পড়া(Hair loss) কমাতে ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই উপাদানগুলো দারুণ কাজ করে।

প্রেগন্যান্সিতে চুল পড়ার কারণ ও করণীয় কী?
এই সময়ে শরীরের ইস্ট্রোজেন লেভেল বেড়ে যাওয়ায় হেয়ার ফলিকলের স্বাভাবিক লাইফ সাইকেল কমে আসে। এর ফলে অতিরিক্ত চুল পড়ার(Hair loss) সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেটা পরবর্তীতে আবার ঠিক হয়ে যায়। এই সময়ে বেসিক হেয়ার কেয়ার করলেই হবে, অর্থাৎ মাইল্ড শ্যাম্পু(Shampoo) দিয়ে চুল ধুয়ে নিবেন, সপ্তাহে ২-৩ দিন অয়েল ম্যাসাজ করবেন। ক্ষতিকর কেমিক্যাল যেমন- অ্যামোনিয়া, প্যারাবেন ইত্যাদি এড়িয়ে যেতে হবে। হেলদি ডায়েট চার্ট মেনে চলবেন, পরিমিত ঘুমাবেন।

কীভাবে মধ্যবয়সে হেয়ার কেয়ার করবেন?
বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকেরই চুলের গোছা কমে যায়, চুল পাতলা হয়ে যায়। আবার সিঁথির কাছেও অনেকটা টাক দেখা যায়। থাইরয়েড প্রবলেম, জেনেটিক্যাল কারণে কিংবা চুলে ঠিক মতো যত্ন না নিলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। সঠিক নিয়মে হেয়ার কেয়ার(Hair care) করে অতিরিক্ত হেয়ার ফলের প্রবলেমটা কনট্রোল করা যেতে পারে।

১) পেঁয়াজের রস(Onion juice) ও অ্যালোভেরা জেল চুলের গোঁড়ায় মানে যেখানে চুল পড়ে ফাঁকা হয়ে গেছে, সেখানে লাগিয়ে রেখে দিন কিছুক্ষণ এবং পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। পেঁয়াজের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং সালফার চুলের ফলিকলের পুষ্টি(Nutrition) বাড়ায়। অ্যালোভেরার গ্লাইকোপ্রোটিন চুলের রিগ্রোথে সাহায্য করে।

২) হেয়ার ফল কন্ট্রোলের জন্য স্পেসিফিক শ্যাম্পু ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট পাওয়া যায়, সেগুলো ইউজ করতে পারেন। অতিরিক্ত চুল পড়ার(Hair loss) সমস্যা নিয়ে চুলে রঙ ও রিবন্ডিং করতে যাবেন না, আগে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখুন। পাকা চুল(Hair) কালারের জন্য হেনা ব্যবহার করতে পারেন, সেটা সবথেকে ভালো অপশন।

৩) ক্যাস্টর অয়েল, ভিটামিন ই ক্যাপসুল, খাঁটি নারিকেল তেলের(Coconut oil) মিশ্রণ দিয়ে সপ্তাহে অন্তত ২ বার অয়েল ম্যাসাজ করবেন। সপ্তাহে ১ দিন অ্যান্টি হেয়ার ফল প্যাক লাগাতে ভুলবেন না।

৪) ঠিকমতো যত্ন নেওয়ার পরেও যদি অতিরিক্ত হারে চুল(Hair) ঝরতে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। অনেক সময় ওষুধের প্রভাবে বা শরীরে কোনো অসুখ থেকেও এটি হতে পারে।

তাহলে জেনে নিলেন, কীভাবে হেয়ার কেয়ারের মাধ্যমে চুল পড়ার(Hair loss) হার কমানো যেতে পারে। ভেতর থেকে পুষ্টি না পেলে এই সমস্যার সমাধান হবে না! তাই নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাবেন, পরিমিত পরিমাণে ঘুমাবেন, স্ট্রেস ফ্রি লাইফ কাটানোর চেষ্টা করবেন। আর চুলের যত্নে সবসময় ভালো মানের প্রোডাক্ট বেছে নিবেন আপনার চুলের ধরন ও প্রবলেম অনুযায়ী। আশা করছি, আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিল। ভালো থাকবেন।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

চুল

চুল ঘন ও কালো করার ঘরোয়া ৪টি উপায়

ঘন কালো সুন্দর চুল (Hair) সকলেরই বেশ পছন্দের। সেই প্রাচীনকাল থেকে মেয়েদের সৌন্দর্যের বর্ণনায় চুলের ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *