Home / লাইফস্টাইল / বিয়ের পর বাচ্চা না হওয়া স্বামী-স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর ১১টি ব্যবস্থা

বিয়ের পর বাচ্চা না হওয়া স্বামী-স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর ১১টি ব্যবস্থা

আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো বিয়ের পর বাচ্চা(Baby) না হওয়া স্বামী-স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর ১১টি ব্যবস্থা সম্পর্কে। অনেক দম্পতিই বিয়ের পর একটি ফুটফুটে বাচ্চার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান থাকেন। অনেকের ক্ষেত্রেই গর্ভধারনের(Pregnancy) বিষয়টি দ্রুত ঘটে যায়, আবার অনেকেই দীর্ঘসময় চেষ্টার পরেও গর্ভধারনে সফল হন না। দেখা যায়, এক দুই মাস চেষ্টার পরে অনেক দম্পতি(Couple) হতাশায় ভুগতে থাকেন। এই ধরনের বাচ্চা(Baby) হতে সমস্যা অনেক দম্পতির বেলায় ঘটে থাকে। অনাকাঙ্খিত এই সমস্যাটি দ্রুত সমধানের জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।বাচ্চা না হওয়া

বিয়ের পর বাচ্চা না হওয়া স্বামী-স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর ১১টি ব্যবস্থা

১. বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ: বাচ্চা(Baby) নেয়ার লক্ষ্যে যে সকল দম্পতি এক বছর বা তার বেশী সময় ধরে চেষ্টা করছেন কিন্তু সফল হচ্ছেন না তারা অতি সত্বর একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তরের পরামর্শ নিন। ডাক্তরের পরামর্শ মতো স্বাস্থ্য ও অন্যান্য পরীক্ষা(Test) করুন। পারিবারিক কোন রোগ বা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকলে তা ডাক্তরকে জানান। সুচিকিৎসার মাধ্যমে এসব কাটিয়ে উঠতে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই সাহায্য করবে। এছাড়া শারীরিক(Physical) কিছু পরীক্ষা যেমন ,ওজন ,রক্তচাপ ,ও আপনার নিতম্ব স্বাস্থ্যবান কিনা ডাক্তার তা পরীক্ষা করে থাকেন। কোন রোগের জন্য কি কি চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন, কি কি ওষুধ গ্রহণ করেছেন-এসব ডাক্তারকে জানান।এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে একজন নারীকে গর্ভধারনের(Pregnancy) পথ সুগম করতে সাহায্য করে।

২. সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন: স্বামী-স্ত্রীর সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন নিশ্চিত করতে হবে যা একজন নারীকে গর্ভবতী(Pregnant) হতে সাহায্য করে। অযথা মানসিক দু:শ্চিন্তা পরিহার করুন।অনেক সময় দেখা যায় কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা(Physical problem) না থাকার পরও অনেকে গর্ভধারণ করতে পারছেন না। এই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হতে হবে।

৩. গর্ভধারনের জন্য সপ্তাহে অন্তত তিনবার যৌন মিলন: মা হবার জন্য নিয়মিত যৌন মিলন(Sexual intercourse) খুবই জরুরী।ওভুলেশান কখন হবে তা হিসেব করে অনেক দম্পতি শুধুমাত্র সেসময় যৌন মিলনে আগ্রহী থাকেন। ওভুলেশানের সময় সঠিক ভাবে নির্ণয় করা অনেক সময় সম্ভব নাও হতে পারে। তাই সপ্তাহে অন্তত তিন দিন স্বামী-স্ত্রীর মিলন গর্ভধারনের(Pregnancy) সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।

৪. ধুমপান, মদ্যপান এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকা: কোন দম্পতি যদি ধূমপায়ী বা মদ্যপায়ী হয় বা স্বামী-স্ত্রীর কোন একজন যদি ধূমপায়ী(Smoker) বা মদ্যপায়ী হয় এই মুহূর্তে তা বর্জন করা উচিত। এসব বদভ্যাস গর্ভধারনে প্রভাব ফেলে । যথাযথ ডিম্ব নিষেকে বাধা দেয়। এটি গর্ভের সন্তানের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর। তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনধরনের ঔষধ(Medicine) সেবন করা উচিত নয়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্যাফেইন মাসিক ঋতুস্রাব অনিয়মিত করে দেয় ফলে গর্ভধারণে বিলম্ব হয়। তাই উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইন পরিহার করা উচিত।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রন: স্বমী-স্ত্রীর অতিরিক্ত ওজন(Weight) থাকলে প্রথমে তা নিয়ন্ত্রন করা উচিত। এরপর সন্তান গ্রহণের কথা চিন্তা করা উচিত। অতিরিক্ত ওজনের কারনে নারীদের অনেকসময় অনিয়মিত ঋতুস্রাব(Menstruation) হয় ফলে চেষ্টা করেও সন্তান ধারণে বিলম্ব হয়। পুরুষের অতিরিক্ত ওজনের কারনে শুক্রানুর(Sperm) সংখ্যা ও পরিমানের তারতম্য দেখা দেয়। ফলে গর্ভধারনে সমস্যা দেখা দেয়।কাজেই উভয়রেই ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। ওজন কম থাকলেও স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে হবে।

৬. সুস্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্য: গর্ভধারনের জন্য স্বামী-স্ত্রীকে ওজন অবশ্যই সব ধরনের জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড, মসলাদার, চর্বি জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলা উচিত। প্রতিদিন সুষম খাদ্য যেমন: সবুজ শাক-সব্জী, চর্বিহীন আমিষ এবং আঁশ(Fiber) জাতীয় খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে। পানি শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।ব্রকলি, ডিম, দুধ এবং প্রচুর পরিমানে মৌসুমি ফল(Seasonal fruit) প্রতিদিন খাবারের মেন্যুতে রাখা গেলে মায়ের পুষ্টির অভাব রোধ করা যাবে এবং ওজন সমস্যাও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভবপর হবে।

৭.গর্ভধারন নিশ্চিতের জন্য ovulation prediction kit এর ব্যবহার: Ovulation prediction kit হচ্ছে একধরনের স্ট্রিপ যা শরীরের তাপমাত্রা এবং প্রস্রাবে Luteinizing হরমোনের লেভেল পরীক্ষা করে এবং ডিম্বনিস্বরনের সময় সস্পর্কে ধারনা দিতে পারে। ওভুলেশান চার্ট অনেক নারীর ক্ষেত্রেই সঠিক ধারণা দিতে পারে না। তাই ovulation prediction kit দিয়ে ওভুলেশানের সময় আগে থেকে জেনে মিলন করলে গর্ভধারনের(Pregnancy) সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।

৮. ঋতুচক্র ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভরশীল না হওয়া: মাসিক ঋজচক্রের ১৪ তম দিন মিলন করলে গর্ভধারনের(Pregnancy) সম্ভাবনা বেশি থাকে। যাদের মাসিক চক্র ২৮ দিনের তাদের ক্ষেত্রে এই হিসেবটি মিলতে পারে। কিন্তু এটি অনুমানমাত্র। অনেক নারীই ঠিক ১৪ তম দিনে ওভুলেট করেন না। কিন্তু আপনি যদি ওভুলেশান প্রিডিকশান কিট অথবা ডিম্ব নিঃস্বরনের কোন আলামত লক্ষ্য করে মিলন করেন তাহলে ভাল ফলাফল পেতে পারেন।

৯. ওভুলেশানের পুর্বে যৌন মিলন: স্বামী-স্ত্রী অনেকসময় ওভুলেশানের জন্য মিলনের সঠিক সময় নিয়ে দ্বিধাদন্দ্বে থাকেন। প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় হচ্ছে গর্ভধারনের(Pregnancy) জন্য সুসময়। নারীর ওভুলেশানের পর আনুমানিক ২৪ ঘন্টা তা জীবিত থাকতে পারে। অন্যদিকে পুরুষের শুক্রানু নারীর যৌনাঙ্গে প্রায় পাঁচ দিনের মত জীবিত থাকে। এ কারনে ওভুলেশানের ২/৩ দিন আগে যৌন মিলন(Sexual intercourse) করলে গর্ভধারনের সম্ভাবনা থাকে বেশি। তাই ওভুলেশানের জন্য অপেক্ষা না করাই শ্রেয়।

১০. বয়সের দিকে লক্ষ্য রাখা: আমাদের এ ব্যস্ততম লাইফ স্টাইলে অনেক পরিবারেই দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরী করেন। নিজেদের প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য এত ব্যস্ত থাকেন যে সন্তান(Children) নেয়ার কথা মনেই থাকে না। কিন্তু বয়স কারো জন্য তো থেমে থাকে না। কাজেই যখন এসব দম্পতি যখন সন্তানের জন্য আকুল হন তখন দেখা যায় হয় বয়সের কারনে গর্ভধারনে সমস্যা হচ্ছে। কাজেই সন্তান নেয়ার জন্য স্বামী-স্ত্রীর দুজনের বয়সের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। প্রথম সন্তান(Children) নেয়ার জন্য নারীর বয়স(Age) অবশ্যই ১৮ এর বেশী এবং ৩০ অধিক হওয়া কখনও উচিত নয়। স্বামীকেও তার বয়সের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।

১১. স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসস্পর্ক থাকা: স্বামী-স্ত্রীর সুসস্পর্কই অনেক প্রতিবন্ধকতাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব।গর্ভধারনের(Pregnancy) জন্য দুজনের মানসিক প্রস্তুতি, দুজনের ভালোবাসা, আন্ডারস্ট্যান্ডিং নানা শারীরিক ও মানসিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে এবং গর্ভধারনের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়।

পরিশিষ্ট- বাচ্চা(Baby) সময়মত নিতে পারছেন না বলে আপনারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কি মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন? ভাবছেন আপনি বন্ধ্যা? এ বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক। চিকিৎসকদের নানা গবেষণায় দেখা গেছে সন্তান না হওয়া বা দেরীতে সন্তান(Baby) হওয়ার সাথে বন্ধ্যাত্বের কোন সস্পর্ক নেই। কারো কারো শারীরিক কিছু সমস্যার কারনে এবং আবার অনেকের শারীরিক কোন সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও সন্তান হচ্ছে না।

একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো সঠিকভাবে চললে এবং নিজেদের সংযত জীবনযাপন ও আহার এবং স্বামী-স্ত্রী দুজনের পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা ও ভালোবাসা এধরনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে নিঃসন্দেহে।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

মেয়ে পটানোর

পছন্দের মেয়ে পটানোর ১০টি উপায় জেনে নিন

পছন্দের মেয়ে পটানোর ১০টি উপায় জেনে নিন। জীবনে একজন সঙ্গী কে না চায়! অনেক সময় ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *