Home / স্বাস্থ্য টিপস / ঘরোয়া আয়োজনে ইফতারের পুষ্টিকর রেসিপি

ঘরোয়া আয়োজনে ইফতারের পুষ্টিকর রেসিপি

ঘরোয়া আয়োজনে ইফতারের পুষ্টিকর রেসিপি । করোনাভাইরাসের এই মহামারীতে চলছে পবিত্র রমজানের রোজা। সুস্থভাবে রোজা রাখার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। নিজেকে এই ভাইরাস(Virus) থেকে বাঁচাতে ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে। আবার সুস্থভাবে রোজা পালনে ইবাদতের পাশাপাশি খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার(Healthy food)। যা জোগাবে সঠিক পুষ্টি ও বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা(Immunity)।ইফতারের পুষ্টিকর রেসিপি

ঘরোয়া আয়োজনে ইফতারের পুষ্টিকর রেসিপি

সাস্থ্যকর খাবার তৈরিতে চাই স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান। কিন্তু বার বার বা রোজ বাজারে না যাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বাজার থেকে এই ভাইরাস যাতে ঘরে না আসে, সেই জন্য রোজ বাজারে না গিয়ে সপ্তাহে একবার বা দুইবার সাবধানে সতর্কতা অবলম্বন করে বাজার করতে হবে। তাই ইফতার(Iftar) আয়োজনে এমন খাবার মেন্যু রাখতে হবে, যা বানাতে অল্প উপকরণ লাগে এবং সল্প সময়ে বানিয়ে অনেক পুষ্টি(Nutrition) উপাদান পাওয়া যায়। একটা খাবার যেন মিল আকারে হয়, অর্থাৎ একটা খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন- এই তিনটি মেজর (প্রধান) পুষ্টি উপাদান ছাড়াও প্রয়োজনীয় ভিটামিনস(Vitamins) ও মিনারেল পাওয়া যাবে, এমন কিছু হেলদি ব্যালেন্স মেন্যুর উদাহরণ নিচে দেয়া হল-

খিচুড়ি
ডাল, চাল, তেল ও সবজি(Vegetable) দিয়ে বানানো খিচুড়ি অনেক ভালো ও আদর্শ একটা সুষম খাবার। এই খাবার থেকে সব উপাদান পাওয়া যাবে। প্রোটিনের মান উন্নত করতে সঙ্গে একটা ডিম(Egg) খাওয়া যেতে পারে। অথবা পাঁচ মেশালি ডাল দিয়েও তৈরি করা যেতে পারে। সবজির রকমফের ব্যবহার করে ভিটামিন ও মিনারেলের মান উন্নত করা যায়। বাচ্চাদের ক্যালরি(Calories) চাহিদা বেশি বলে এর সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে ঘি। যাদের আবার প্রেসার বা হার্টের সমস্যা আছে তারা উদ্ভিজ্জ তেল অল্প ব্যবহার করে খিচুড়ি(Khichuri) রান্না করতে পারে। শুধুমাত্র কিডনি রোগীরা এই খাবারটি এড়িয়ে চলবে।

নুডলস
বাচ্চা নয়, বড়দেরও পছন্দের খাবার নুডলস। নুডলস(Noodles) কার্বহাইড্রেট হিসেবে কাজ করে। এর সঙ্গে ডিম বা মাংস দিলে প্রোটিন যুক্ত হয়। সবজি ও শাক দিয়ে নুডলস রান্না করলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেল(Mineral) পাওয়া যাবে। এটিও সুষম খাবার হিসেবে গ্রহণ করা যায়। তেলের ব্যবহার কম করলেই ছোট বড় সবাই ইফতারে খেতে পারবে। ডায়াবেটিস(Diabetes) রোগীরা একটু পরিমিত পরিমাণে খাবে।

পাস্তা
অনেক রকম পাস্তা(Pasta) তৈরি করা যায়। বাচ্চারা পছন্দ করে হোয়াইট সস পাস্তা। কিন্তু অনেক ফ্যাট থাকে বলে বড়রা কম পরিমাণে খাবে। পাস্তা বানাতে মাশরুম(Mushroom) যোগ করলে অনেক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। হোয়াইট সস পাস্তা থেকে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে।

দই, চিড়া ও কলা
সর্ব সাধারণের জন্য এটি একটা আদর্শ খাবার। চিড়া কার্বোহাইড্রেট, দই প্রোটিন ও কলা থেকে প্রচুর ভিটামিন(Vitamin) ও মিনারেল পাওয়া যাবে। এই খাবারটি সহজে হজমযোগ্য। বাচ্চাদের ক্যালরি চাহিদা বেশি বলে এর সঙ্গে একটু গুড় বা মধু দেয়া যেতে পারে। দই থেকে অল্প ফ্যাট(Fat), যা দুধের ন্যাচারাল ফ্যাট তা পাওয়া যাবে এই রেসিপিটিতে। তাই হার্টের রোগীদের জন্য এবং যাদের প্রেশার আছে, তাদের জন্য এটি একটা আদর্শ ইফতার রেসিপি।

রুটির রোল
ঘরে হাত রুটি বানিয়ে তাতে মাংস বা ডিম ও সবজি(Vegetable) একসঙ্গে রান্না করে, স্যাকা রুটির মধ্যে একসঙ্গে রান্না করা মাংস ও সবজি দিয়ে পেচিয়ে রোল করে খেলে সব পুষ্টি(Nutrition) উপাদান পাওয়া যাবে। তেলে ভাজা হয় না বলে এটি সাস্থ্যকর।

রুটি, ডিম ও সবজি
লাল আটার রুটি, সঙ্গে ডিম ওমলেট ও সবজি(Vegetable) খেলে সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে রঙিন সবজি অনেক পুষ্টি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেবে। ডিম ইফতারে আদর্শ একটা খাবার। অনেক প্রোটিন(Protein) ছাড়াও মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট যেমন জিংক, সেলেনিয়াম পাওয়া যায়।

ভাত ভাজা
রান্না করা ভাত, সঙ্গে ডিম, আদা, সবজি, তেল দিয়ে খুব সাধারণভাবে ভাত ভাজা করা যায়। এতে প্রচুর ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি(Nutrition) উপাদান পাওয়া যাবে। আদা, ধনে পাতা, পেঁয়াজ ও রঙিন সবজি থেকে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের(Antioxidants) পাশাপাশি ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যাবে।

ভাত, ডাল ও মাছ
সহজ পাচ্য ইফতার হিসেবে এটি ভালো একটা উদাহরণ। যাদের গ্যাস বা এসিডিটি(Acidity) অথবা আইবিএস এর সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি খুব ভালো একটা আদর্শ খাবার মেন্যু। নরম ভাত কার্বোহাইড্রেটের কাজ করে। মাছ থেকে ভালো পুষ্টির পাশাপাশি ভালো ফ্যাট পাওয়া যাবে, যা হার্টের জন্য ভালো। ডাল থেকে প্রোটিন ও পটাশিয়াম(Potassium) পাওয়া যায়৷ রান্নায় তেল ফ্যাট হিসেবে কাজ করে। ডায়াবেটিসের রোগী, যারা ইনসুলিন নেয় তাদের জন্য পরিমিত পরিমাণে ভাত, মাছ ও সবজি খেলে হাইপো গ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধ করা যায়।

দুধ, সাগু আর ফল
এটি সিম্পল একটি রেসিপি। সাগু, দুধ দিয়ে রান্না করে তার সঙ্গে পাকা ফল মিশিয়ে খেলে অনেক পুষ্টি(Nutrition) উপাদান পাওয়া যাবে। দুধ থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস পাওয়া যায়। যা হাড়ের সুস্থতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সাগু থেকে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যাবে। আর যে ফল খাবেন সেটা থেকেই ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যাবে।

হালিম
ঘরে বানানো হালিম অনেক প্রচলিত একটা ইফতার(Iftar)। ডাল, গম, আটা, তেল ও মাংস দিয়ে তৈরি এই রেসিপি প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন পাওয়া যাবে। হালিম খেলে এর সঙ্গে একটু ফলের জুস আর দুটো খেজুরই যথেষ্ট। হালিম খিচুড়ির চেয়ে বেশি প্রোটিন(Protein) প্রদান করে।

সহজে বাড়িতে বানানো পুষ্টিকর এমন রেসিপির সঙ্গে দুই-তিনটা খেজুর ও একটা সাস্থ্যকর তরল পান করলে আর কোনো চিন্তাই থাকবে না। সুস্থভাবে রোজা পালনে ঘরের তৈরি খাবারের কোনো বিকল্প নেই।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

অ্যাসিডিটি

ওষুধ ছাড়াই অ্যাসিডিটি কমানোর ‍ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির (Acidity) সমস্যায় ভোগেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই কঠিন। সব বয়সীদেরই এই ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *