Home / বিউটি টিপস / ত্বক পরিচর্যা সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে জেনে নিন

ত্বক পরিচর্যা সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে জেনে নিন

ত্বক পরিচর্যা সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে জেনে নিন। ব্রণ(Acne) হচ্ছে তবে তৈলাক্ত খাবার খাওয়া বাদ, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক(Skin) রক্ষা করতে ‍উচ্চ মাত্রার ‘এসপিএফ’ সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা ভালো, ত্বকের দাগ(Skin spot) দূর করতে পারে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম। এরকম বিভিন্ন ধরনের ধারণা ত্বক(Skin) পরিচর্যার ক্ষেত্রে প্রচলিত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব পদ্ধতি অন্ধবিশ্বাসের মতো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আসলেই কি তাই? বরং প্রচলিত ধারণাগুলো কতটা সত্যি আর কতটা মিথ্যা তার জানার চেষ্টা করা যাক বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে।ত্বক পরিচর্যা

ত্বক পরিচর্যা সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে জেনে নিন

ধারণা: তৈলাক্ত খাবার ও চকলেট ব্রণ সৃষ্টি করে
ব্রণ(Acne) সৃষ্টির অন্যতম কারণ হল ত্বকের তেল ‘সিবাম’এর মাত্রা বৃদ্ধি। দুয়েকটা খাবার বাদ দেওয়া ত্বকের ব্রণ(Acne) সৃষ্টিকারী সিবামের মাত্রার খুব একটা পরিবর্তন আনে না। প্রয়াত মার্কিন ত্বকবিশেষজ্ঞ ড. জেমস ই. ফাল্টন, তার ক্লিনিকের ৬৫ জন ব্রণের রোগীর ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে সিদ্ধান্ত দেন, চকলেট(Chocolate) খাওয়ার কারণে ব্রণ হয় না। এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে অস্ট্রেলিয়ার ত্বকবিশেষজ্ঞ ডা. ফিলিপ সরব্রিক বলেন, “এক সময় মানুষ বিশ্বাস করতো চকলেট খেলে ব্রণ হয়।

এখন আমরা বলতে পারি ব্রণ(Acne) হওয়ার জন্য খাদ্যাভ্যাস কোনো বিষয় নয়।” ব্রিটিশ চর্মরোগবিশেষজ্ঞ লিওনেল ফ্রে ‘দি ইলাস্ট্রেইডেট এনস্লাইকোপিডিয়া অফ ডার্মাটোলজি’ বইতেও একই কথা লিখে রেখে গেছেন।এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনিস্টিটিউট এই তথ্য সমর্থণ করে জানায়, ব্রণ(Acne) হওয়ার কারণ ত্বকের ধরন, জিন ও বংশগত বৈশিষ্ট্য। চকলেট ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার কারণে ব্রণ হয় না।

ধারণা: বেশি এসপিএফ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভালো
রোদের তাপ থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিনের(Sunscreen) বিকল্প নেই, বাজারেও রয়েছে এর নানান বাহার। বিভিন্ন মাত্রার এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) যুক্ত সানব্লক পাওয়া গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্কিন ক্যান্সার ফাউন্ডেশন’ এবং ‘এনভাইরনমেন্টাল ওয়ার্কিং গ্রুপ’য়ের ওয়েবসাইট ইডব্লিউ ডটঅর্গ’এর নির্দেশনা অনুসারে এসপিএফ ৩০ সমৃদ্ধ সানব্লক(Sunblock) ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

কেননা এটা ৯৭ শতাংশ সূর্যরশ্মিকে বাধা দিতে সাহায্য করে। যদি দীর্ঘক্ষণ রোদে বাইরে থাকতে হয়, বিশেষত বেলা ১২টা থেকে ২টা-৩টা পর্যন্ত, তবে বেশি এসপিএফ যুক্ত সানব্লক(Sunblock) ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়িতে থাকলে উচ্চ এসপিএফ ব্যবহারে প্রয়োজন নেই।

ধারণা: ভিটামিন ই তেল ত্বকের দাগ দূর করে
ত্বকের দাগ(Skin spot) কারও পছন্দ নয়। দাগ দূর করতে নানান রকমের ওষুধ ও সার্জারির সফলতার প্রমাণ পাওয়া গেলেও ভিটামিন ই’-এর ক্ষেত্রে এরকম কোনো প্রমাণ মেলেনি। ‘জার্নাল অফ প্লাস্টিক, রিকনোস্ট্রাকটিভ অ্যান্ড অ্যাসথেটিক সার্জারি’তে প্রকাশিত ২০১১ সালের গবেষণার তথ্যানুসারে, দুই সপ্তাহ ধরে দৈনিক দুবার ৫ শতাংশ ভিটামিন ই(Vitamin E) সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের ত্বকের দাগের তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।

‘জার্নাল অফ বার্ন কেয়ার অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেইশন’এ প্রকাশিত ১৯৮৬ সালের আরেকটি গবেষণার তথ্যানসুারে, অপারেশনের পরে ভিটামিন ই ব্যবহারের পরেও ত্বকের দাগের তারতম্য ঘটেনি। আগুনে দগ্ধ রোগীর ত্বক(Skin) পুনর্নির্মান করার জন্য অস্ত্রোপচারের পর অংশগ্রহণকারীদের ওপর ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম, ওষুধ এবং স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। তবে ত্বকের দাগ(Skin spot) কমাতে সেসব উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব রাখেনি। আসলে ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং পুষ্টি(Nutrition) যোগাতে সহায়তা করে। তবে ত্বকের দাগ দূর হবে এমন ধারণা ভুল।

ধারণা: ‘ফেইস অয়েল’ ব্যবহারে মুখে ব্রণ হয়
ত্বকের সুরক্ষায় ভেষজ ফেইস অয়েল(Herbal Face Oil) বাছাই করা যেতে পারে। এই বিষয়ে ‘গেটদিগ্লস ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে লন্ডননিবাসী সৌন্দর্য ও ত্বক-বিশেষজ্ঞ অ্যাবিগিয়ল জেইমস বলেন, “আমার অভিজ্ঞতায় সব ফেইস অয়েল খারাপ নয়। ত্বক(Skin) অতিরিক্ত শুষ্ক হলে এই ধরনের তেল ব্যবহার উপকারী।” তিনি পরামর্শ দেন, এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উৎসের উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করা ভালো। যেমন- জোজোবা, ‘স্টার ফ্লাওয়ার’, ‘মিল্ক থিস্টেল’, প্রিমরোজ এবং আঙুরের দানা থেকে তৈরি ‘ফেইস অয়েল’(Face oil)। তবে যেগুলো ভারী তেল যেমন- নারিকেল, জলপাই বা অ্যাভোকাডো’র তেল মুখে মাখা উচিত না। এগুলো ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে ব্রণ(Acne) সৃষ্টি করার জন্য দায়ী।

ধারণা: ‘ক্লে মাস্ক’ অনেকক্ষণ ব্যবহার করা উপকারী
অনেকেই মুখে ‘ক্লে মাস্ক’(Clay mask) ব্যবহার করে তা সম্পূর্ণ শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। তবে এই ধরনের মাস্ক হালকা ভেজা থাকতেই তুলে ফেললে ভালো কাজ করে। সৌন্দর্য-বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফ্লোরিডা-অ্যাকাডেমি, তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ‘ক্লে মাস্ক’(Clay mask) উপকারী। তবে ১৫ মিনিটের বেশি মেখে রাখা যাবে না। আর সপ্তাহে তিনদিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। আর সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয় যদি সম্পূর্ণ শুকানোর আগেই তুলে ফেলা হয়। তাই মনে রাখতে হবে, মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করা জরুরী।

গরমে ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পানি পান করার পাশাপাশি ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বকের ক্ষয় থেকে বাঁচতে সঠিক প্রসাধনী(Cosmetic) ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও, ত্বকের গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

মেকআপ

দ্রুত মেকআপ করার ৮টি সহজ পদ্ধতি

রমজানে পুরো মাসব্যাপী রোজা রাখার পর শরীর থাকে ক্লান্ত। এরপর আসে ঈদ। আর সেখানে কর্মব্যস্ত ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *