Home / মা ও শিশু / বাচ্চাকে সহজে ঘুম পাড়ানোর ৭টি প্রমাণিত উপায় শিখে নিন

বাচ্চাকে সহজে ঘুম পাড়ানোর ৭টি প্রমাণিত উপায় শিখে নিন

গবেষণায় জানা গেছে, ৩০% থেকে ৪০% বাচ্চার ঘুমের সমস্যা রয়েছে। তাই বাচ্চাকে ঘুমের রাজ্যে পাঠানোর কাজটি বাবা মায়ের জন্য খুব কষ্টদায়ক এবং বিরক্তিকর(Annoying) হয়ে পড়ে। তবে হতাশ হবেন না! যদিও সমস্যাটি সামালা দেওয়া খুব কঠিন, তবুও কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো প্রয়োগ করলে খুব সহজেই বাচ্চার দু’চোখে ঘুম এনে দেবে এবং গভীর রাতে ঘুম(Sleep) ভাঙবে না।বাচ্চাকে

বাচ্চাকে সহজে ঘুম পাড়ানোর ৭টি প্রমাণিত উপায় শিখে নিন

আমরা দেহ নতুন বাবা মায়ের জন্য নতুন কৌশল খুঁজে বেড়াই, যেন তাদের উপর অতিরিক্ত চাপ(Extra stress) কিছুটা হলেও কমে। এখানে গবেষণায় প্রমাণিত ৭টি কৌশল উল্লেখ করা হলো যা বাচ্চার ঘুমের মান বৃদ্ধি করবে।

১. ঘুমের সময় নির্দিষ্ট করা
নির্দিষ্ট সময়ে গোসল করানো, ঘুমপাড়ানি গান গাওয়া, গল্প পড়ে শোনানো, এমনকি পোশাক পাল্টে দেওয়াও ঘুমের সময় হয়েছে বলে জানান দেয়। ঘড়ি ধরে প্রতিদিন একই সময় বিছানায় নিয়ে গেলে ধীরে ধীরে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। ঘুমের অন্তত ১ ঘণ্টা আগে খেলাধুলা, উচ্চ শব্দ, চমক দেওয়া অথবা ফোন বা ট্যাবের মতো ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট(Electronic gadgets) থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।

২. শারীরিক স্পর্শ গুরুত্বপূর্ণ
বাচ্চাদের জন্য শারীরিক স্পর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা বলছে, এতে শিশু শান্ত থাকে এবং তারদের দ্রুত ঘুম চলে আসে। অন্য আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু বাবা মায়ের শরীরের স্পর্শ বঞ্চিত হয়, তাদের দেহে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন(Stress hormone) নিঃসরণ ঘটে — যা ঘুমের সমস্যাসহ আরও অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এজন্য, দিনের বেলায় শিশু যদি যথেষ্ট শারীরিক সংস্পর্শ না পায়, তাহলে রাতের বেলায় ঠিক সময়ে তার ঘুম(Sleep) পাবে না এটাই স্বাভাবিক। শিশু দিনে যত বেশি আলিঙ্গন এবং চুমো পাবে, তার রাতে ঠিক সময়ে ঘুমের সম্ভাবনা তত বেশি বেড়ে যাবে।

৩. মৃদু আলোর ব্যবস্থা করুন
তীব্র আলো আমাদের মস্তিষ্ককে স্পষ্ট সংকেত দেয়: জেগে থাকো। কিন্তু গবেষকরা রাতে বেলায় কেমন আলো জ্বাললে তা ঘুমের জন্য ভালো হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। সাদা আলোর নীল রঙ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কারণ এটি আমাদের আরাম বোধ এবং ঘুম সৃষ্টিকারী মেলাটোনিন হরমোন(Hormone) নিঃসরণে বাধা দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

বাচ্চার ঘুমের সময় ঘনিয়ে এলে তীব্র আলো নিভিয়ে মৃদু আলো দেয় এমন বাতি জ্বেলে দিন। কণ্ঠস্বর নিচু রেখে কথা বলুন, ফিসফিস করে কথা বললে শিশুর দ্রুত ঘুম(Sleep) চলে আসে।

৪. তাকে সঙ্গ দিন
শিশুকে ঘুম পাড়ানোর আগে তাকে সঙ্গ দিন। আস্তে আস্তে সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করুন। গবেষক এবং ঘুম বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতি নবজাতক এবং অল্পবয়সী বাচ্চা সবার জন্য প্রমাণিত। নবজাতকের ক্ষেত্রে তার ঘুম(Sleep) না আসা পর্যন্ত তার পাশে থাকুন। ৩ সপ্তাহ পর থেকে ঘুমের সময় পাশে থাকার বিষয়টি থেকে নিজের দূরত্ব বাড়াতে শুরু করুন।

৫. ‘কান্না নিয়ন্ত্রণ’ পদ্ধতি ব্যবহার করুন
এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত ধীরে ধীরে শিশু নিজে থেকে ঘুমিয়ে পড়তে শিখে যায়। পদ্ধতিটির নামের সাথে কাজেরও মিল রয়েছে। শিশুকে একা একা ঘুমাতে শেখানোর জন্য এই পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর। শুধুমাত্র শিশুর কান্নার শব্দ শোনার পরই বাবা মা কান্না থামাতে কাছে যাবেন। তবে দূর থেকে সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে যেন, সে ঠিক ঠাক থাকে।

৬. ঘুমের সময় পিছিয়ে দেওয়া
এটি আগের সব পদ্ধতি থেকে একটু ভিন্ন। এখানে ঘুমে সময় এগিয়ে নিয়ে আসার বদলে কয়েক দিনের জন্য একটু পিছিয়ে দিতে হবে। প্রতিদিন যে সময়ে শিশুকে ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস(Habit) তৈরির চেষ্টা করছেন, তার থেকে আধা ঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা সময় পিছিয়ে দিলে শিশু ঘুমে আচ্ছন্ন হতে শুরু করবে। অল্প কয়েকদিন এমন করে তাকে আগের ঘুমের রুটিনে নিয়ে আসবেন। দেখবেন আগের রুটিন মতোই সে ঠিক সময়ে ঘুমিয়ে পড়বে।

৭. সুন্দর গল্প শোনান
বাস্তব জগতের পাশাপাশি কল্পনার রাজ্যেরও বাসিন্দা বাচ্চারা। তারা সব সময় কল্পনার জগতে বাস করে। তাই অন্তত ৮০.৫% শিশু দুঃস্বপ্ন দেখে এবং মাঝ রাতে ঘুম(Sleep) ভেঙ্গে কান্নাকাটি শুরু করে। এর থেকে রক্ষা পেতে ঘুমানো আগে তাকে সুন্দর সুন্দর গল্প শোনাবেন, যেসব গল্পের আনন্দ অনুভূতি তৈরি হয়। এর ফলে শিশু আনন্দ চিত্তে ঘুমিয়ে পড়বে, থাকবে না কোনো ভয়ের অনুভূতি।

বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর জন্য আপনি কী অন্য কোনো সুন্দর এবং কার্যকর পদ্ধতি প্রয়োগ করে উপকার পেয়েছেন? যদি পেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের তা জানাতে পারেন। আমরা আমাদের পাঠকদের তা জানাতে চাই।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

নবজাতককে কখন গোসল করাবেন

নবজাতককে কখন গোসল করাবেন? জেনে নিন

নবজাতককে কখন গোসল করাবেন? জেনে নিন। অনেকে প্রশ্ন করেন, সিজারে বাচ্চা হয়েছে, কতক্ষণ পর গোসল(Bath) ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *