Home / স্বাস্থ্য টিপস / হৃদরোগীদের দাম্পত্য জীবন কেমন হবে? জেনে নিন

হৃদরোগীদের দাম্পত্য জীবন কেমন হবে? জেনে নিন

হৃদরোগীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে(Eating habit) পরিবর্তন এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। নিয়মমাফিক জীবনযাপন করলে হৃদরোগ(Heart disease) হলেও ভালো থাকা যায়। রোগ শনাক্ত হওয়ার পর হৃদরোগীদের লাইফস্টাইলে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়। দাম্পত্য জীবনেও আনতে হয় কিছু বদল।  এ বিষয়ে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন মেডিনোভা সার্ভিসেসের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মো. তৌফিকুর রহমান।হৃদরোগীদের

হৃদরোগীদের দাম্পত্য জীবন কেমন হবে? জেনে নিন

বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভুত উন্নতিতে দ্রুত ও সময়মতো রোগ নির্ণয়, জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা এবং ভালো কার্যকর ও কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পন্ন ওষুধ(Medicine) আবিষ্কারের ফলে হাজার হাজার হৃদরোগী হার্টঅ্যাট্যাকের পরও স্বাভাবিক ও কর্মক্ষম জীবনযাপন এমনকি সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন করতে পারছে।

তবে হৃদরোগীদের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন দুশ্চিন্তা(Anxiety) ও চাপ নিবিড় সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ জন্য পারস্পরিক ধৈর্য ও বোঝাপড়া খুবই জরুরি। কোনো ব্যক্তি পুরুষ বা মহিলা যেই হোক না কেন যিনি হৃদরোগে ভুগছেন, বিশেষ সম্পর্ক অবশ্যই মানসম্মত জীবনাচরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

বিভিন্ন কারণ নিবিড় দাম্পত্য সম্পর্কের বাধা হতে পারে। হৃদরোগের অনেক উপসর্গ যেমন বুকে ব্যথা(Pain) বা শ্বাসকষ্ট বা দম বন্ধ হয়ে আসা বা অতিরিক্ত বুক ধড়ফড় করা দাম্পত্য সম্পর্কের আনন্দকে কমিয়ে মাটি করতে পারে। পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ না হলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা যৌন দুর্বলতা(Sexual weakness) দেখা দিতে পারে। যদিও নারীদের ক্ষেত্রে উত্তেজনা ও এখানে রক্ত সরবরাহের কোনো সম্পর্ক নেই।

হৃদরোগে ব্যবহৃত কিছু কিছু ওষুধও দাম্পত্য(Conjugal) সুখের অনুভূতিতে বা ওরগ্যাজমে ব্যাঘাত করতে পারে। হৃদরোগ বা হার্ট ফেইলোরের জন্য দেওয়া কোনো ওষুধ চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই পরিবর্তন বা বাদ দেওয়া যাবে না। এ আশঙ্কায় যে এই ওষুধগুলো দাম্পত্য সুখে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ সব কিছুর ওপরে সুস্থ হার্ট(Heart) বা হৃদ স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। দাম্পত্যে পরিপূর্ণ আনন্দ উপভোগের জন্য অবশ্যই হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে হবে।

স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবনে ফিরতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় বাইপাস সার্জারি করার পর, যদিও স্বাভাবিক কাজকর্ম, চাকরি বা পেশায় বা সামাজিক জীবনে ফিরতে তেমন সমস্যা হয় না। অপারেশন পরবর্তী অস্বচ্ছন্দ অনুভব করা, নিজের বুকের মাঝখানের কাটা দাগ এবং সঙ্গীর অহেতুক অমূলক আশঙ্কা ও ভয় স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবনে ফিরতে বাধা। কিন্তু যারা বাইপাস অপারেশন পরবর্তী সময়ে কার্ডিয়াক রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামে অংশ নেয় এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করে তারা খুবই দ্রুত এমনকি কয়েক মাসের মধ্যেই স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্কে ফিরতে পারে, এমনকি তাদের তৃপ্তির মাত্রাও বেশি হয়।

হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর বা হার্ট অ্যাটাক(Heart attack) হলে বা কোনো হার্ট ফেইলোর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার পর যে ভয়টা সবচেয়ে বেশি কাজ করে যে, নিবিড় সম্পর্কের সময় নতুন করে হার্টঅ্যাটাক হয় কিনা বা পুনরায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয় কিনা বা হঠাৎ মৃত্যু হয় কিনা। যদিও সিনেমা বা মিডিয়াতে যা দেখানো হয়, বাস্তবে গোপন সম্পর্কের সময় রোগীর হার্ট অ্যাটাক(Heart attack) হওয়া খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা যায়। কারণ বিশেষ মুহূর্তে যে শারীরিক পরিশ্রম হয় তা খুব কম সময় ব্যাপী।

হৃদরোগীদের জন্য এ সতর্ক বার্তা যে, যারা বুকে ব্যথার জন্য নিয়মিত নাইট্রেট জাতীয় ওষুধ খান তারা অবশ্যই ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা যৌন দুর্বলতার(Sexual weakness) জন্য ব্যবহৃত সিলডেনাফিল বা টাডালাফিল জাতীয় ওষুধ পরিহার করবেন।

যাদের হৃদরোগ আছে ও তা নিয়ন্ত্রণে আছে তাদের সঙ্গীর সঙ্গে থাকতে কোনো সমস্যা নেই। যেসব হৃদরোগী উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন যেমন অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপ(High blood pressure), আনস্ট্যাবল বা অস্থিতিশীল এনজাইনা বা গুরুতর হার্ট ফেইলোর রোগীদের ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে হবে এবং যথাযথ চিকিৎসা ও কার্ডিয়াক রিহ্যাবিলিটেশনের পর রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে তখন মিলন করা যাবে।

হৃদরোগীদের জন্য হৃদরোগ নির্ণয়ের পর সফলভাবে বিশেষ সম্পর্ক শুরু করার জন্য কতিপয় পরামর্শ—

* এমন একসময় বের করতে হবে যখন দুজনই বিশ্রামে ও রিল্যাক্সড। সাধারণত কোনো বেলার খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘণ্টার পর হলে ভালো।
* এমন জায়গা পছন্দ করা উচিত যা পরিচিত, ঘরোয়া, ব্যক্তিগত ও আরামপ্রদ।
* সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর আগে আপনার চিকিৎসক আপনাকে কোনো ওষুধের পরামর্শ করলে তা নিতে হবে।
* আলিঙ্গন ও আদর বা সোহাগের মাধ্যমে শুরু করা যেতে পারে, যা অধিক আরামপ্রদ। যদি কোনো বুকে ব্যথা(Pain) বা শ্বাসকষ্ট না হয়, তবে আরও অগ্রসর হওয়া যেতে পারে।
* যদি কোনো উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা থাকে তা সঙ্গীকে অবহিত করতে হবে, পরস্পরের আবেগ অনুভূতিকে মূল্যায়ন বা সম্মান দিতে হবে।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

পুদিনা পাতা

ইফতারে পুদিনা পাতা খেলে পাবেন ৮টি উপকারিতা

রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে ইফতারিতে পুষ্টিকর (Nutritious) খাবার খুবই জরুরি। তাই ইফতারির মেন্যুতে রাখতে ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *