সব ঋতুতেই চুলের যত্ন (Hair Care) প্রয়োজন। ঋতু ভেদে চুলের যত্নের একটু ভিন্নতা আসলেও কিছু কিছু বিষয় সব ঋতুতে একই রকম থাকে। যেমন তেল দেওয়া থেকে শুরু করে চুলে নানান ধরনের হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা পর্যন্ত। তবে শুধু চুলের যত্ন করলেই হবে না। চুলের ধরণ বুঝে করতে হবে চুলের যত্ন। সবার চুলের যত্ন একই রকম হবে না বা সবার চুলের যত্নের চাহিদাও একই রকম হবে না কারণ প্রতিটা মানুষের চুলের ধরণ আলাদা।
ঋতু উপযোগী চুলের যত্ন নিবেন যে ভাবে
যা যা করবেন
ঋতু ভেদে চুলের যত্ন যতই আলাদা হোক না কেন কিছু বিষয় সবারই খেয়াল রাখতে হবে। যেমন নিয়মিত চুল (Hair) পরিষ্কার রাখা। চুলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন তেল দেওয়া। প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার চুল আঁচড়ানো। রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে চুল বেঁধে ঘুমানো। প্রতি ৩ দিন পরপর বালিশের কভার পরিবর্তন করুন।
যে কাজ গুলো করা যাবে না
ভেজা চুল আঁচড়াবেন না। চুল ভেজা অবস্থায় কখনোই বালিশে মাথা রাখবেন না। জট পাঁকানো চুলে কখনোই তেল ব্যবহার করবেন না। তেল (Oil) ব্যবহার করার আগে চুল ভালো করে জট ছাড়িয়ে তারপর ব্যবহার করবেন। তেল দেওয়া কিংবা শ্যাম্পু করার সময় চুলে যেন নখ না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নখ চুলের গোড়াকে দুর্বল করে তোলে। হিটিং টুলস যত সম্ভব কম ব্যবহার করুন।
চুলের জন্য তেল
যেমনি হোক না কেন যে ধরনেরই হোক না কেন সকলের চুলের জন্যই তেল অপরিহার্য। হট ওয়েল ম্যাসাজের জন্য ( ২ বার সপ্তাহে)। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো নারকেল তেল ক্যাস্টর অয়েল ও অলিভ ওয়েল (Olive oil) একত্রে মিশিয়ে গরম করে নিন। তারপর সেই তেল আঙুলের সাহায্যে স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। এতে স্ক্যাল্পেও রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। অক্সিজেন সরবরাহ হবে। চুলের রুক্ষতা দূর হয় ও চুলে উজ্জ্বলতা আসে। নারিকেল তেল সব চুলের জন্যই উপযোগী কারণ নারিকেল তেল (Coconut Oil) চুলে প্রোটিন ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি। শুল্ক চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে। সব ধরনের চুল যেমন রিবন্ডিং হেয়ার, কালারড হেয়ার, ব্লিচড হেয়ার, রোদ ও হিটে ড্যামেজ হওয়া চুলেও প্রাণ ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেল। এই তেল চুলকে গোড়া থেকে শক্ত করে। সঙ্গে স্টাইলিংয়ের কারণে যেকোনো ধরনের হেয়ার ড্যামেজ থেকেও চুলকে রক্ষা করে। নারিকেল তেল চুলের ময়েশ্চার (Moisture) বাড়িয়ে চুলকে সফট ও স্মুথ করে। যার ফলে চুলে কোনো জট থাকে না। আঁচড়ানোর সময় চুল ভেঙে যায় না।
শ্যাম্পু করা
শ্যাম্পুর মূল কাজই চুল পরিষ্কার রাখা। সপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু করুন। ধুলাবালি যাতে গোড়ায় থেকে না যায় সে দিকটি খেয়াল রাখবেন। স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখার জন্যে একটি ভালো শ্যাম্পু (Shampoo) ব্যবহার করা প্রয়োজন। বেশি ক্যামিকেল যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার থেকে দূরে থাকবেন। স্ক্যাল্পে যদি আবার ক্যামিকেল পরতে থাকে নিয়মিত তাহলে আবার চুলের ক্ষতি। মনে রাখবেন স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকলেই চুল ভালো থাকবে।
কন্ডিশনার
শ্যাম্পু করার পরে অবশ্যই কন্ডিশনার (Conditioner) ব্যবহার জরুরি। আমরা অনেকেই এই ভুলটা করে থাকি। অনেকে মনে করে, শ্যাম্পু করার পরে কন্ডিশনার না লাগালেও চলবে। কিন্তু পুরুষ-নারী প্রত্যেকের কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। কন্ডিশনার, শ্যাম্পু করার পরে আপনার চুলে একটি সুরক্ষা-স্তর তৈরি করে যা বাইরের ধুলোবালি, দূষণ থেকে চুলকে রক্ষা করে।
হেয়ার প্যাক
অন্তত সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্যাক লাগান বাহিরের যে পরিমাণ পলিউশন এবং এই পলিউশন থেকে যে পরিমাণ লাগালেই নয় বাহিরের এই পলিউশনে চুলের প্রাণ হারিয়ে যায় চুলের সজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্যাক লাগানো আবশ্যক। হেয়ার প্যাক (Hair pack) এর জন্য একটি ডিম, একটি কলা, ৪-৫ টুকরা পেঁপে ও ফ্যাটানো টক দই। মেথি, শিকাকাই ও আমলা তিনটি গুড়া ও অন্যান্য উপকরণ একত্রে মিক্স করে চুলে লাগান। ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট চুলে রেখে তারপর ভালো করে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
হেয়ার টনিক
প্রকৃতি পরিবর্তনের পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবেই মানবদেহের বিভিন্ন পরিবর্তন আসে আর সবচেয়ে পরিবর্তন যেখানে আসে সেটা হল আমাদের চুলে এবং অনেকেই আছে হেয়ার প্যাক লাগানোর ঝামেলায় একদমই যেতে চান না তাদের জন্য হেয়ার টনিক চুলের মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করবে।
যেভাবে তৈরি করবেন হেয়ার টনিক
আদার রস, পিয়াজের রস, আমলকির রস ও রসুনের রস (Garlic juice) একত্রে মিক্স করে এরমধ্যে এক চামচ মধু, এক চামচ এলোভেরা জেল ও এক চামচ নারিকেল তেল মিক্স করে চুলে লাগান। এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। চুলের গোড়া খুব দ্রুত পরিষ্কার হবে। চুল দ্রুত লম্বা হবে।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।