অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি খাবার হচ্ছে বীজ (Seed)। বিভিন্ন ধরনের বীজ ফাইবারের দারুণ উৎস। এছাড়াও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এতে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের বীজ অন্তর্ভুক্ত করলে যেমন এনার্জি (Energy) বাড়বে, তেমনি দূরে থাকা যাবে নানা ধরনের অসুস্থতা থেকেও। জেনে নিন বীজ খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
যে ৬টি বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
১। প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মেলে চিয়া বীজ থেকে। ২৮ গ্রাম চিয়া বীজে থাকে ১৩৭ ক্যালোরি, ১০.৬ গ্রাম ফাইবার, ৪.৪ গ্রাম প্রোটিন (Protein) ও ৫ গ্রাম ওমেগা ৩ ফ্যাট। রক্তে শর্করা কমানোর পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এই বীজ। হজমের সমস্যা দূর করতেও রয়েছে চিয়া বীজের ভূমিকা। চিয়া বীজের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে মুক্ত র্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়া বলিরেখা (Wrinkle) প্রতিরোধ করতে সক্ষম এই বীজ।
২। ছোট্ট তিল বীজ আরেকটি উপকারী খাবার। বিভিন্ন ধরনের আইটেমে যেমন এটি বাড়তি স্বাদ যোগ করে, তেমনি আমাদের সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium), আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের উৎস এই বীজ। ১ আউন্স তিলের বীজে পাওয়া যায় ১৬০ ক্যালোরি, ৩.৩ গ্রাম ফাইবার, ৫ গ্রাম প্রোটিন, ৫.৩ গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৬ গ্রাম ওমেগা -৬ ফ্যাট। তিল বীজ লিগন্যানের একটি বড় উৎস, যা হরমোন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এছাড়া প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতেও এর জুড়ি নেই।
৩। ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এবং আয়রনের উৎস মিষ্টি কুমড়ার বীজ। আউন্স বা ২৮ গ্রাম বীজে মেলে ১৫১ ক্যালোরি, ১.৭ গ্রাম ফাইবার, ৭ গ্রাম প্রোটিন, ৪ গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ৬ গ্রাম ওমেগা- ৬ ফ্যাট। কুমড়ার বীজে রয়েছে স্কোয়ালিন এবং ভিটামিন ই (Vitamin E), যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। এই বীজ জিঙ্কের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা ব্রণ প্রতিরোধ করতে এবং কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় ও ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
৪। আমাদের কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে আটকায় ভিটামিন ই। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই মেলে সূর্যমুখীর বীজ থেকে। এছাড়া উৎকৃষ্ট পরিমাণে প্রোটিন (Protein) ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে এই বীজে। এক আউন্স (২৮ গ্রাম) সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ১৬৪ ক্যালোরি, ২.৪ গ্রাম ফাইবার, ৫.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৫.২ গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৬.৪ গ্রাম ওমেগা -৬ ফ্যাটি অ্যাসিড (Fatty Acid)। প্রদাহ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে সূর্যমুখীর বীজ। লিনোলিক, ওলিক এবং পামিটিক অ্যাসিডের মতো ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো সূর্যমুখী বীজে পাওয়া যায়, যা কোলাজেন উৎপাদনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে ত্বক সুস্থ থাকে।
৫। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবারের দারুণ উৎস ফ্ল্যাক্স সিড। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানেও ভরপুর এটি। ১ আউন্স বা ২৮ গ্রাম ফ্ল্যাক্স সিডে পাওয়া যায় ১৫২ ক্যালোরি, ৭.৮ গ্রাম ফাইবার, ৫ গ্রাম প্রোটিন, ২.১ গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৬.৫ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ১.৭ গ্রাম ওমেগা -৬ ফ্যাটি অ্যাসিডসহ থায়ামিন, ম্যাংগানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম। ফ্ল্যাক্স সিডে থাকা কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড দীর্ঘমেয়াদে ফেরাতে পারে ত্বকের স্বাস্থ্য। কোলেস্টেরল, রক্তচাপের পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর এই বীজ।
৬। হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা এনার্জির জোগানের জন্য অত্যন্ত জরুরি ক্যালসিয়াম (Calcium), আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় পোস্তদানা বা পপি সিড থেকে। এছাড়া এতে ফাইবার থাকে যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
