Home / সেক্স লাইফ / শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় যেসব খাবার

শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় যেসব খাবার

রুষত্বের জন্য দায়ী মূল হরমোন হচ্ছে টেস্টোস্টেরন (Testosterone)। পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে থাকে। টেস্টোস্টেরন শরীরে কমে যাওয়ার কারণে অ্যান্ড্রোপজ হয়। টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে পুরুষের যৌন চাহিদা (Sexual desire), মানসিক শক্তি ইত্যাদি ক্রমশ পরিবর্তিত হতে থাকে। গড়ে ৩০ বছর বয়স হওয়ার পরে এর মাত্রা প্রতিবছর ১% করে কমে; সাধারণত ৭০ বছর বয়স্ক পুরুষের শরীরে এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক কমে যায়। কারও কারও এ মাত্রা আরও কমে যেতে পারে।টেস্টোস্টেরন

শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় যেসব খাবার

টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে বিভিন্ন রকম লক্ষণ উপসর্গ দেখা যায়। পুরুষের স্বাভাবিক যৌনাচরণের পরিবর্তন হয়। অনেকের অণ্ডকোষ দুটি আকারে-আকৃতিতে ছোট হয়ে যায় এবং যৌন দুর্বলতা (Sexual weakness) দেখা দেয়। মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। কর্মস্পৃহা অনেক কমে যায়। কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি অনেকে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যৌবনের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, মনের জোর, সব জয় করার এক উদগ্র বাসনা; টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমার ফলে তা কোথায় যেন উবে যায়। অনেকে কোনো কাজে একভাবে মনঃসংযোগ করতে পারেন না, স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসে; এমনকি অনেকে বিভিন্ন মাত্রার বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি কামবাসনা কমে যাওয়া, লিঙ্গোত্থানে সমস্যা, খারাপ মেজাজসহ মনোযোগের অভাব দেখা দেয়।

শারীরিক অসুখ যেমন- থাইরয়েড (Thyroid) গ্রন্থির সমস্যা, বিষণ্ণতা রোগ, অতিরিক্ত মদ্যপান (Drinking) ইত্যাদি কিংবা ওষুধ সেবনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবেও এ রকম হতে পারে। জীবনাচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেমন- স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করা ইত্যাদি। সুস্থ জীবনাচরণ শারীরিক শক্তি ও মানসিক উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। টেস্টোস্টেরন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলেই উপকৃত হওয়া যায়। শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে এমনই কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হলো।

১। মধু
মধুতে আছে প্রাকৃতিক নিরাময়কারী উপাদান বোরোন। এই খনিজ উপাদান টেস্টোস্টেরনের (Testosterone) পরিমাণ বাড়াতে এবং নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রাখে। যা ধমনী সম্প্রসারণ করে লিঙ্গোত্থানে শক্তি সঞ্চার করে।

২। আদা
আদা প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য বিশেষ উপকারী । ইরাকে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে,আদা পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় ১৭% বৃদ্ধি করতে সক্ষম । এটি খুবই সহজে দৈনন্দিন খাবারের মেনুতে যোগ করা যায় কেননা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ানো ছাড়াও এর অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে ।

৩। বাঁধাকপি
এই সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন (Vitamin) ও খনিজ উপাদান। আরও আছে ইনডোল থ্রি-কার্বিনল। এই উপাদান স্ত্রী হরমোন ওয়েস্ট্রজেনের পরিমাণ কমিয়ে টেস্টোস্টেরন বেশি কার্যকর করে তোলে।

৪। রসুন
রসুনের আলিসিন যৌগ মানসিক চাপের হরমোন করটিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে টেস্টোস্টেরন ভালোমতো কাজ করে। ভালো ফল পেতে রসুন (Garlic) কাঁচা খাওয়ার অভ্যেস করুন।

৫। ডিম
ডিমে আছে স্যাচারেইটেড ফ্যাট, ওমেগা থ্রিএস, ভিটামিন ডি, কলেস্টেরল (Cholesterol) এবং প্রোটিন। টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরির জন্য এই উপাদানগুলো জরুরি।

৬। কলা
কলা ব্রোমেলেইন এনজাইম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। আর দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহের উৎস হিসেবে কাজ করে।

৭। মাংস
যারা মাংস খান না তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কম থাকে। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার আগে সাবধান। যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান গরু ও ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি খাবারে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট (Saturated fat) থাকে।

৮। কাঠবাদাম
নারী এবং পুরুষ উভয়ের ‘সেক্স ড্রাইভ’য়ের জন্য প্রতিদিন এক মুঠ কাঠবাদাম যথেষ্ট। এই বাদামে রয়েছে জিঙ্ক যা টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় আর কামবাসনা বৃদ্ধি করে।

৯। বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার
হরমোনগুলোর ঠিক মতো কাজ করার জন্য কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাদাম বা বীজ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা, শরীরে কোলেস্টেরল তৈরিতে সাহায্য করে। বীজ জাতীয় খাবার যেমন কুমড়োর দানায় থাকে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক যা সেবনে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড সুস্থ থাকে। পাশাপাশি, শুক্রাণু (Sperm) তৈরি করে এবং টেসটোস্টেরন হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। রোজ খান কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি।

১০। টক ফল
‘স্ট্রেস হরমোন’ কমানোর পাশাপাশি টকজাতীয় ফলে রয়েছে ভিটামির এ। যা টেস্টোস্টেরন উৎপন্ন করতে প্রয়োজন হয়। এছাড়া ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমায় অর্থাৎ পুরুষ হরমন ভালোমতো কাজ করতে পারে।

১১। পালংশাক
এটা প্রমাণিত যে, ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমাতে পারে এই শাক। তাছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি (Vitamin C) এবং ই। আর এসবই টেস্টোস্টেরন তৈরির উপাদান।

১২। আঙুর
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একথোক লাল আঙুর খাওয়া গেলে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, শুক্রাণুর তৎপতরতা উন্নত করে আর শক্তিশালী করে।

১৩। ডালিম
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইম্পোটেন্স রিসার্চ থেকে জানা যায় যৌন কর্মে অক্ষম পুরুষদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ যারা প্রতিদিন ডালিমের রস খেয়ে থাকেন তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

১৪। ঝিনুক
টেস্টোস্টেরন তৈরিতে জিংক গুরুত্বপূর্ণ। ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ উপাদান। যা টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। ঝিনুক (Oyster) পছন্দ না, তাহলে বিকল্প হতে পারে চিজ বা পনির। বিশেষ করে সুইস এবং রিকোত্তা চিজ।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

ব্যায়াম

রোজ যে দুটি ব্যায়াম বাড়িয়ে দেবে আপনার সেক্স পাওয়ার

জিম করলে নাকি উত্তাল হয়ে ওঠে যৌনতা। আপনি যত ফিট (Fit), ততই বাড় বাড়ন্ত আপনার ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *