মধু শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয় ত্বকের জন্যও খুবই উপকারী। বহুদিন ধরে খাবারের পাশাপাশি রূপচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। ত্বক ও চুলের যত্নে মধু অতুলনীয়। তবে অনেকেরই জানা নেই মধু ব্যবহারের সঠিক নিয়ম। মধু রোদে পড়া ট্যান থেকে শুরু করে নিস্তেজ ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি আপনার রূপচর্চার নিয়মিত রুটিনের অংশ করতে পারেন মধু। এটি এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ত্বক নরম রাখে, বলিরেখা ও কালচে ভাব দূর করে। এ ছাড়া ব্রণের জীবাণুও ধংস করতে মধু বেশ কার্যকর। খুব কম সময়েই উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে মধুর কোনো বিকল্প নেই। আপনি চাইলে মাত্র পাঁচদিনেই মধু দিয়ে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারেন। তাই চলুন জেনে নিই যেভাবে মধু ব্যবহার করলে আপনাকে আর পার্লারে যেতে হবে না, বাড়িতে অনায়াসেই করতে পারবেন।
মাত্র পাঁচ দিনে ত্বক উজ্জ্বল করুন এই উপাদানে
১। ক্লিনজার হিসাবে মধুর ব্যবহার
মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং হিউমেক্ট্যান্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি আপনার ত্বকে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। এটি ব্রণ এবং ত্বকের জ্বালাভাব প্রতিরোধ করে। এটিতে ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এর জন্য মুখে, গলায় ও ঘাড়ে মধু লাগান। ২০ মিনিটের জন্য এটি রেখে দিন। এর পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
২। ফেসিয়াল টোনার হিসেবে মধুর ব্যবহার
মধু আপনার ত্বকের ওপেন পোরস বন্ধ করতে এবং ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আপনি মাত্র দুটি উপাদান ব্যবহার করে এই ফেস টোনারটি তৈরি করতে পারেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন শসা এবং মধু। শসা খোসা ছাড়িয়ে তার পিউরি বানিয়ে নিন। শসার রসের জন্য পিউরি ছেঁকে নিন। এবার ওই শসার রসে মধু মিশিয়ে নিন। একটি বোতলে মিশ্রণটি ঢেলে ভালো করে ঝাকিয়ে নিন। শেষে একটি তুলার প্যাডের সাহায্যে এই ফেসিয়াল টোনারটি আপনার ত্বকে লাগান।
৩। মধু ও কলার প্যাক
এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে সামান্য কলা চটকে নিয়ে প্যাক তৈরি করুন। ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে।
৪। মধু, গোলাপজল ও হলুদের গুঁড়ো
এক টেবির চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও সামান্য হলুদের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে এক নিমিষেই উজ্জ্বল করবে।
৫। মধু ও লেবুর রস
এক চা চামচ মধুর সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ২০ মিনিট মুখ ম্যাসাজ করুন। এরপর ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। ২০ মিনিট পরে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বক নিমিষেই উজ্জ্বল হয়ে যাবে।
৬। মধু ও টকদই
এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে এক টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর। এ ছাড়া ত্বকের ব্রণ দূর করতেও এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
৭। মধু ও পেঁপে
দুই টুকরো পেঁপে চটকে নিয়ে এর সঙ্গে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে লাগিয়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। এ ছাড়া বয়সের ছাপ দূর করতেও এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
৮। মধুর তৈরি স্ক্রাব
মধুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য এটি ত্বকের জন্য একটি দুর্দান্ত এক্সফোলিয়েটর হিসাবে কাজ করে। এটি আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলিকে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর করে। এর জন্য একটি পাত্রে মধু ও চিনি দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। মুখ ভিজিয়ে তারপর সারা মুখে লাগান। আপনার মুখ এবং ঘাড় আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। ৫-১০ মিনিটের জন্য এটি রেখে দিন। এর পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মধু এক ধরনের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি বাতাস থেকে জলীয়কণা ত্বকের ভিতরে টেনে নেয় যা ত্বকের গভীরে নমনীয়তা ধরে রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘসময় ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে মধু দারুণ উপকারী।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।