চুল পড়া অত্যন্ত জটিল সমস্যা। গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাথায় প্রায় এক লাখ থেকে দেড় লাখ চু‘ল থাকে। সাধারণ পরিস্থিতিতে মাথার চু‘ল প্রায় তিন বছর টিকে থাকে (অ্যানাজেন পর্যায়)। এরপর এগুলো টেলোজেন বা বিশ্রামের পর্যায়ে প্রবেশ করে। তিন মাসের টেলোজেন সময়কালে চুলের গোড়া উঠে যায়, তারপর চু‘ল পড়ে। তাই প্রতিদিন প্রায় ১০০টি চু‘ল পড়া বা কমে যাওয়া স্বাভাবিক।
কেন এত চুল পড়ে, করণীয় বা কী
চুলের জীবনচক্রে বিশ্রামের পর্যায় শেষে চুল পড়ে যায় এবং একটি নতুন চু‘ল এটি প্রতিস্থাপন করে ও চক্রটি আবারও শুরু হয়। সাধারণত, প্রায় ১০ শতাংশ চু‘ল টেলোজেন পর্যায়ে থাকে। তবে বেশ কিছু পরিস্থিতিতে চুলের বৃদ্ধির ছন্দ পরিবর্তিত হয়। ফলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ চু‘ল যেতে পারে টেলোজেনে। এর তিন মাস পর চুলে বড় পরিবর্তন আসে। চু‘ল পড়া সমস্যা দেখা যায়। চু‘ল পড়া বছরের পর বছর ধীরে ধীরে হতে পারে বা হঠাৎ বেশি হতে পারে। চুল পড়া স্থায়ী বা অস্থায়ী হতে পারে।
কেন এত চুল পড়ে
● চুল পড়ার সবচেয়ে পরিচিত কারণ বংশগত, যা বয়স বা বার্ধক্যের সঙ্গে বাড়ে।
● থাইরয়েড ডিজিজ, রক্তাল্পতা, মাথার ত্বকের দাদ।
● উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, গাউট, ডিপ্রেশন, হার্ট ডিজিজের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়, এমন কিছু ওষুধ সেবন। এ ছাড়া ক্যানসারে কেমোথেরাপির মতো কিছু ওষুধের কারণে অস্থায়ীভাবে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
● সন্তান জন্ম দেওয়ার পর বা মেনোপজের সময় হরমোনের প্রভাবে নারীদের চু‘ল পাতলা বা পড়ে যেতে পারে।
● গর্ভনিরোধক বড়ি বন্ধ করা, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ইত্যাদি হরমোন ভারসাম্যহীনতাও নারীদের চু‘ল পড়ায় জড়িত।
● সাধারণ টাক বা বালডিং জিনগতভাবে সংবেদনশীল চুলের ফলিকলের টেস্টোস্টেরন বিপাকের প্রভাবের কারণে ঘটে।
● তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা; বিশেষ করে জ্বর, এইডস, অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনা ও মানসিক চাপ।
● হঠাৎ ওজন হ্রাস, অস্বাভাবিক ডায়েট, পুষ্টির ঘাটতি।
● মাথার সোরিয়েসিস, লাইকেন প্লানাস, সেবোরিক একজিমা, লুপাস ইরাইথেমাটোসাস-জাতীয় চর্মরোগ।
● চুলের স্টাইলের কারণে, যেমন চু‘ল সোজা করা বা আয়রনিং করা, চুলে বাহ্যিক রং করা, চু‘ল শক্ত করে দীর্ঘ সময় বেঁধে রাখা।
● হট অয়েলিং হেয়ার চিকিৎসা।
● অনেকের চুল টেনে ওঠানোর অভ্যাস ও মানসিক আঘাত।
করণীয়
● চুল পড়ার কারণ খুঁজে বের করা। প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া।
● গোসলের আগে ও রাতে ঘুমানোর আগে চু‘ল আঁচড়ানো।
● মাথার তালু পরিষ্কার রাখা। মেডিকেটেড শ্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে দুই দিন মাথার তালু ও চু‘ল পরিষ্কার করা।
● সুষম খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, রাতে পর্যাপ্ত ঘুম।
● শরীরচর্চা করা ও মানসিক চাপমুক্ত থাকা।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।