সেরোটোনিন, ডোপামিন, অক্সিটোসিন এবং এন্ডোরফিনের মতো ‘সুখী হরমোন’ আমাদের মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। মস্তিষ্ক হ্যাপি হরমোন নামক রাসায়নিক নির্গত করলে আমাদের মানসিক চাপ কমে, আমরা আনন্দিত থাকি। কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস হরমোনগুলোর নিঃসরণ বাড়াতে পারে। জেনে নিন সেগুলো কী কী।
হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায় যে ৭টি অভ্যাস
১। ব্যায়াম হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যকলাপ এন্ডোরফিনের উৎপাদন বাড়ায়, যাকে ফিল-গুড হরমোন বলা হয়। দ্য প্রাইমারি কেয়ার কম্প্যানিয়ন টু দ্য জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ব্যায়াম করলে হতাশা এবং উদ্বেগের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। মূলত এন্ডোরফিন নিঃসরণের কারণেই এটি সম্ভব হয়।
২। ইতিবাচক হওয়া এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা জরুরি। কৃতজ্ঞতা একটি শক্তিশালী আবেগ যা মানসিক স্বাস্থ্যকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। কৃতজ্ঞতা প্রকাসের অভ্যাস থাকলে সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়ে। ফলে আমরা আনন্দিত থাকি। দ্য জার্নাল অব পার্সোনালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এমনটিই দাবি করা হয়েছে।
৩। মানুষ সহজাতভাবে সামাজিক প্রাণী, এবং মানসিক সুস্থতার জন্য শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অক্সিটোসিনকে বলা হয় ভালোবাসার হরমোন। সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে এই হরমোনের নিঃসরণ হয়। এটি বন্ধন এবং বিশ্বাসের অনুভূতির জোগায় আমাদের। প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো, গল্প করা এবং প্রিয়জনকে আলিঙ্গন করার মতো কাজগুলো অক্সিটোসিনের নিঃসরণ বাড়ায়।
৪। মানসিক সুস্থতাসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ঘুম অপরিহার্য। ঘুমের অভাব সেরোটোনিন এবং অন্যান্য মেজাজ-নিয়ন্ত্রক হরমোনের মাত্রা কমে যায়। প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো তাই খুব জরুরি।
৫। পুষ্টিকর খাবার আমাদের শরীর এবং মনে ভারসাম্য বজায় রাখে। কিছু খাবার সুখী হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে পারে। ট্রিপটোফেন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম এবং বাদাম সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে পারে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, মাছ এবং তিসি বীজে পাওয়া যায়, ডোপামিনের মাত্রা বাড়াতে পারে এগুলো।
৬। পছন্দের কাজ বা শখের কাজ করুন। এগুলো হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। ছবি আঁকা, বাগান করা, গান গাওয়া বা পড়ার মতো পছন্দের কাজ করে অবকাস কাটান।
৭। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য মেডিটেশন করুন। সেরোটোনিন এবং এন্ডোরফিনের মাত্রা বাড়াতে পারে মেডিটেশন। প্রতিদিন মাত্র কয়েক মিনিট ধ্যান করলে মস্তিষ্ক শান্ত থাকে।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।