চা পান করতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বিশেষ করে চা ছাড়া দিনই শুরু হয় না অনেকের। এটি সারাদিন সতেজ রাখতেও দারুণভাবে কাজ করে। আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়র তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে চা। কেউ ভালোবাসেন রং চা, কেউবা আবার দুধ চা দিয়ে পরোটা খেতে বেশি ভালোবাসেন। শখের বশে খাওয়া এ পানীয় কিন্তু আপনার জন্য অনেক উপকারীও হতে পারে। তবে সেই চা পান করতে হবে একটু বুঝেশুনে।
রং চা পানের উপকারিতা জেনে নিন
আপনি কেমন চা পান করছেন তার ওপর নির্ভর করছে কতটুকু উপকার পাবেন। চা কিন্তু রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিরোধ করে ক্যানসারও। এর পাশাপাশি হার্ট ভালো রাখতেও কাজ করে এ পানীয়। স্বাস্থ্যের জন্য রং চায়ের উপকারিতার কথা শুনলে অবাক হবেন! তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উপকারিতা-
১। রং চা হার্টের রক্ত সরবরাহ বাড়ায়, হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে।
২। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৩। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪। চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্ককে সচল রাখে ৷
৫। শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে।
৬। রক্ত চলাচল ভালো হয় ৷
৭। কিডনি রোগের জন্য উপকারী।
৮। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়।
প্রতিদিন চা পান করলে ইউ ভি রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের কোষগুলো রক্ষা পায়। ফলে স্কিন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রং চা উপকারী, কারণ এটি কোষ থেকে সাধারণের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নিঃসৃত করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
রং চা পানের গুণাগুণ
জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট অনুসারে, চায়ের মধ্যে রয়েছে, ক্যাফেইন, অ্যামিনো অ্যাসিড, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ক্লোরোফিল, ফ্লোরাইড, অ্যালুমিনিয়াম, মিনারেলস ইত্যাদি। রং চা-তে পলিফেনল, রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা উদ্ভিদকে অতিবেগুনি রশ্মি বা ক্ষতিকারক, রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে। ফ্ল্যাভোনয়েডস এক ধরনের পলিফেনল। এই পলিফেনলগুলোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রভাব থাকে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি ফ্রি র্যাডিকাল কোষগুলোর ক্রিয়াকলাপকে প্রতিহত করতে পারে। ফ্রি র্যাডিকেলস স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে এবং এমনকি দেহের কোষগুলোকে মেরেও ফেলতে পারে। ফ্রি র্যাডিকেলগুলো ক্যানসারের মতো অনেক রোগের বিকাশেও অবদান রাখে।
অপকারিতা
পরিমাণের বেশি অতিরিক্ত চা পান করলে বিপরীত প্রতিক্রিয়াও ঘটতে পারে। সঠিক সময়ে বা উপায়ে চা পান না করলে শারীরিক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। খাবার আগে বা খাওয়ার পরে পরেই চা পান করা উচিত নয়। এতে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। চা শরীর থেকে ভিটামিন ‘বি’ শোষণ রোধ করে যা বেরিবেরি রোগের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত চা বা কফি পানের কারণে এগুলোর প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। ফলস্বরুপ, একমুহূর্ত চা বা কফি ছাড়া থাকা যায় না, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি অনুভব হয়।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।