Home / চুলের যত্ন / চুলের আগা ফাটার কারণ ও পরিত্রাণের উপায় জেনে নিন

চুলের আগা ফাটার কারণ ও পরিত্রাণের উপায় জেনে নিন

আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো চুলের আগা ফাটার কারণ ও এর থেকে পরিত্রাণের উপায়। লম্বা চুল(Hair) রাখতে চাচ্ছেন, কিন্তু কোন ভাবেই চুলের আগা ফাটা থামাতে পারছেন না? এর চেয়ে বিরক্তিকর কিছু কি আর আছে? বাজে ব্যাপার হচ্ছে, চুল(Hair) যত লম্বা হবে, আগা ফেটে চুলের নিচের দিক লাল, পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা ততই বাড়বে। এর কারণ জানেন কি? এর কারণ চুলের আগা স্ক্যাল্প থেকে অনেক দূরে থাকায় স্ক্যাল্পের সেবাম চুলের আগায় পৌছাতে পারে না। আর তাই চুল(Hair) ড্রাই আর ড্যামেজড হয়ে ফেটে যায়। এমনকি আমার স্ক্যাল্প প্রচণ্ড অয়েলি হওয়া সত্ত্বেও আগা ফাটা থামাতে অনেক বেগ পেতে হয়! যাদের চুল(Hair) ড্রাই, তাদের কথা আর নাই বা বললাম। তাই আজ আপনাদের চুলের আগা ফাটা রোধ করার জন্য কী করবেন আর কী কী একেবারেই করবেন না, সেই বিষয়ে কিছু টিপস দেবো।চুলের আগা ফাটা

চুলের আগা ফাটার কারণ ও পরিত্রাণের উপায় জেনে নিন

চুলের আগা ফাটা রোধ করতে যে ৪টি কাজ একেবারেই করবেন না

১) হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে রোজ চুল শুকানো
অনেকেরই অভ্যাস আছে রোজ রোজ চুল হেয়ার ড্রায়ার(Hair dryer) দিয়ে শুকানোর। যার ফলে চুলের আদ্রতা হিটের কারণে ধীরে ধীরে চলে যায় এবং কিছু বোঝার আগেই পুরো চুল লাল হয়ে ফেটে যায়। সুতরাং, কোন ভাবেই হিট প্রটেক্টর ছাড়া চুলে হেয়ার ড্রায়ার(Hair dryer) কেন, ফ্ল্যাট আয়রন, কারলার খবরদার ছোঁয়াবেন না। চুল যদি অলরেডি ফেটে গিয়ে থাকে তাহলে তো এ কাজ পুরপুরি নিষিদ্ধ।

২) গামছা দিয়ে চুল ঝাড়া
আবার অনেকের অভ্যাস আরও বাজে, গামছা দিয়ে চুল(Hair) ঝেড়ে চুলের বারটা বাজিয়ে দিয়ে চুল শুকানোর ফার্স্ট আউট কাম হচ্ছে একগাদা ফাটা চুল!! এমনকি মোটা তোয়ালে দিয়ে গোসলের পড়ে চুল পেচিয়ে রাখলেও চুলের আদ্রতা তোয়ালে টেনে নিতে পারে। বিখ্যাত হেয়ার স্টাইলিস্টদের মতে গোসলের পর চুল থেকে চেপে চেপে পানি(Water) বের করে ফেলতে হবে। কোন ভাবেই চুল মুচড়ে পানি ঝরানোর চেষ্টা করা যাবে না। মোচড়ানোর হ্যাবিট থাকলে ফাটা চুল(Hair) তো ভালো, সব চুল ধীরে ধীরে ভেঙ্গে যাবে কয়দিন পর সেই হিসাব করতে হবে। চুলের জন্য সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পাতলা গেঞ্জি কাপড়। পানি একেবারেই সহ্য করতে না পারলে গেঞ্জি কাপড় দিয়ে চুল চেপে পানি(Water) ঝরাতে পারেন। অন্য কোন কাপড়, গামছা, তোয়ালে ভুলেও চুলে ছোঁয়াবেন না।

৩) চুলে অতিরিক্ত ড্রাইয়িং শ্যাম্পু ইউজ
চুলে অতিরিক্ত ড্রাইয়িং শ্যাম্পু ইউজ করবেন না। যদি মনের মত শ্যাম্পু(Shampoo) খুঁজে না পান জাস্ট বেবি শ্যাম্পু ইউজ করুন। সাথে সাথে মনে রাখবেন কোন ভাবেই কন্ডিশনার(Conditioner) মিস করবেন না এবং যাদের চুলের ফাটা সমস্যা সব সময় থাকে তারা কোনভাবেই চুলের বডিতে তেল না দিয়ে শ্যাম্পু করবেন না।

৪) গরম পানি চুলে ব্যবহার
কোন ভাবেই গরম পানি(Water) চুলে দেবেন না। গরম পানিতে চুলের তন্তুগুলো আস্তে আস্তে আদ্রতা হারিয়ে এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে যায়। যে কারণে চুল লালচে দেখায় এবং ফাটা শুরু করে। খুব বেশি হলে ঈষদুষ্ণ পানি নিন এবং গোসলের শেষে একদম ঠাণ্ডা পানি(Water) চুলে ডেলে তাপমাত্রা নরমালে নিয়ে আসুন। এতে চুলের তন্তু ঠিক জায়গায় থাকবে। চুল(Hair) দেখতে অনেক সিল্কিও লাগবে এবং আগাও ফাটবে না।

চুলের আগা ফাটা বন্ধে কী করবেন?
সবার আগে এটা জেনে নিন যে, কসমেটিক বিক্রেতারা যাই বলুক না কেন, চুল(Hair) একবার ফেটে গেলে সেটা জোড়া লাগে না। সুতরাং, আপনি জোড়া লাগার আশায় ফাটা চুল(Hair) নিয়ে বসে থাকলে আস্তে আস্তে সেই ফাটা উপরের দিকে উঠতে থাকবে, এবং আপনি হঠাৎ একদিন দেখবেন আপনার অর্ধেক চুল লালচে, দুর্বল, পাতলা। কপাল খারাপ হলে অন্য কেউ আপনাকে দেখিয়ে দেবে, আপনার চুলের অবস্থা।

তো বুঝতেই পারছেন, চুল(Hair) এই অবস্থায় যাওয়ার আগেই তা কেটে ফেলতে হবে। আর তাই প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ পর চুল থেকে খুব অল্প মানে- ১ সে মি/ ০.৫ সে মি কেটে ফেলুন। যাদের অলরেডি মাথায় ফাটা চুল(Cracked hair) আছে, তারা পুরো ফাটা অংশ কেটে ফেলুন এবং তার পর ৮ সপ্তাহ পর পর ট্রিম করুন। চুল(Hair) দেখতে অনেক হেলদি লাগবে এবং পাতলা, লাল হয়ে থাকা কোঁকড়ানো আগা আর খুজে পাবেন না।

প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন অথবা শ্যাম্পু করার আগে মাথায় নারকেল তেল(Coconut oil), অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মিনিমাম ৪ ঘণ্টা রেখে তারপর শ্যাম্পু(Shampoo) করুন। স্কাল্প যদি বেশি অয়েলি লাগে তবে মাথায় লাগাতে না পারলেও চুলের বডিতে অবশ্যই তেল লাগান। অ্যাটলিস্ট চুলের আদ্রতা বজায় থাকবে।

আরও পড়ুনঃ ত্বক উজ্জ্বল করতে আলুর রস। জেনে নিন পদ্ধতি

চুলের আগা ফাটা বন্ধে কিছু প্যাক
১) একটা ডিমের কুসুম (হলুদ অংশ) , দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল(Olive oil) আর এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগান। ১-২ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

২) চুল অতিরিক্ত ড্রাই হলে মাথায় মেহেদি(Mehdi) দেবেন না। মেহেদি চুল আরও বেশি ড্রাই করে ফেলে।

৩) ২ টেবিল চামচ টক দই , এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক চা চামচ লেবুর রস(Lemon juice) মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ইউজ করতে পারেন। আগা ফাটা রোধ করা সহ চুল(Hair) সিল্কিও করবে।

এই তো জেনে নিলেন চুল ফাটা রোধের কিছু কারণ ও উপায়সমূহ। তাই চুলের যত্ন নিন সুন্দরভাবে।

আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

চুল

গরমে চুল ভালো রাখার সহজ ৪টি উপায়

ঘরে-বাইরে সবখানেই রোদের তাপ। সঙ্গে আছে ধুলাবালুও। আবহাওয়ার এই চরম অবস্থার প্রভাব পড়ছে আমাদের চুলে। ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *