Home / মা ও শিশু / গর্ভবতী মায়ের যত্ন

গর্ভবতী মায়ের যত্ন

আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো গর্ভবতী(Pregnant) মায়ের যত্ন নিয়ে কিছু কথা। আজকের শিশু(Children) আগামী দিনের ভবিষ্যত। এই ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ(Healthy), সুন্দর, সাবলীল স্বাস্থ্যে উন্নত রাখার জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়ের চাই বিশেষ যত্ন(Care)। মহিলাদের গর্ভধারনের পূর্বেই নিজের স্বাস্থ্য, গর্ভধারণ ও সন্তান পালন সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার। কারণ একজন সুস্থ্য মা-ই পারে একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর জন্ম(Born) দিতে।গর্ভবতী মায়ের যত্ন

গর্ভবতী মায়ের যত্ন

তাই গর্ভবতী((Pregnant)) মায়ের জন্য প্রয়োজন সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন পরিবারের সবার মানসিকতার পরিবর্তন। মনে রাখতে হবে, একজন নারী তাঁর শরীরের(Body) মধ্যে ধারণ করছেন আরেকজন ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ। এই ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষটি পেটের ভেতর বেড়ে ওঠার জন্য চাই পরিবেশবান্ধব অবস্থা—সেটা হবে খাদ্য(Food), আলো, বাতাস, বিশ্রাম ও সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ এবং সে অনুযায়ী পথ্য ও পরীক্ষা। পুরো গর্ভাবস্থাকে এ জন্য তিনটি সময়ে ভাগ করা হয়েছে–

প্রথম তিন মাসঃ
প্রথম গর্ভধারণের লজ্জা, বমি বমি ভাব, এসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য(Constipation) ইত্যাদি তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। অথচ এই সময়ই বাচ্চার অঙ্গ–প্রত্যঙ্গগুলো পূর্ণ রূপ লাভ করে (পিরিয়ড অব অরগানোজেনেসিস)। তাই মাকে এ সময় সহমর্মিতার পাশাপাশি বমি বেশি হলে বমিনাশক, অম্লনাশক(Acidicide), কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি(Vegetables), ফলমূল ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। এ সময় ছোট কয়েকটি পরীক্ষা—যেমন রক্তের হিমোগ্লোবিন, সুগার ও গ্রুপ করে রাখা উচিত।

দ্বিতীয় তিন মাসঃ
যাঁদের মাসিক অনিয়মিত, তাঁদের তারিখ নিশ্চিত করার জন্য ১২–১৪ সপ্তাহে এবং যাঁদের কোনো বংশগত(Hereditary) বা জন্মগত সমস্যা আছে, কিংবা হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য ২০–২২ সপ্তাহে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হবে। যেহেতু গর্ভস্থ শিশুর শরীর গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান মায়ের কাছ থেকেই আসে, তাই মায়ের প্রতিদিনের খাদ্য হতে হবে সুষম(Balanced), যার মধ্যে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ(Milk), শাকসবজি, ফলমূল ও প্রচুর পানি(Water) থাকতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দুপুরে অন্তত দুই ঘণ্টা ও রাতে অন্তত আট ঘণ্টা বিশ্রাম দিতে হবে। আগে টিকা দেওয়া না থাকলে গর্ভাবস্থায় পাঁচ ও ছয় মাস শেষ হলে দুটি টিটি টিকা দিতে হবে। গর্ভস্থ শিশুর বাড়ন্ত গঠনের জন্য আয়রন, ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে দিলে ভালো হয়।

শেষ তিন মাসঃ
এ সময় গর্ভের শিশু খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে। মোট গর্ভকালীন মায়ের ১০–১২ কেজি ওজন(Weight) বৃদ্ধির বেশির ভাগ এ সময় হয়। এ সময় অনেক গর্ভবতী(Pregnant) মায়ের পায়ে পানি আসে। পেট বড় হওয়ার জন্য মৃদু শ্বাসকষ্ট, এসিডিটি কষ্ট, স্তন থেকে কিছু তরল পদার্থ নিঃসৃত হতে পারে। এগুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। তাঁকে এসব বুঝিয়ে বলতে হবে। নিয়মিত ওজন ও প্রেশার মাপা, জরায়ুর ফান্ডাল উচ্চতা মেপে দেখা। কোনো জটিলতা দেখা দিলে, যেমন অস্বাভাবিক পেট বড় বা ছোট হওয়া, হঠাৎ রক্তভাঙা, খুব বেশি জ্বর আসা, বেশি রক্তচাপ(Blood pressure) দেখা দেওয়া—এমন পরিস্থিতিতে তাড়াতাড়ি চিকিৎসক দেখাতে হবে।

গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকাঃ
শক্তিদায়ক খাবার– ভাত, রুটি/পরাটা, আলু, চিনি(Suger), গুড়, সুজি, সয়াবিন তেল, বাদাম(Nut), কলিজা, ঘি/মাখন, ডিমের কুসুম ইত্যাদি। শক্তি ক্ষয়পূরণ এবং নবজাতকের শরীর(Body) বৃদ্ধিকারক খাবার– মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের সাদা অংশ, বিভিন্ন ধরনের ডাল, মটরশুটি, সীমের বীচি ইত্যাদি। রোগ(Disease) প্রতিরোধক খাবার– সবুজ, হলুদ ও অন্যান্য রঙ্গিন শাক-সবজি ও সবধরনের মৌসুমী ফল-মূল।

গর্ভবতী মা কি খাবেন,কি পরিমাণ খাবেনঃ
প্রতিদিন তিন ধরণের খাবারের তালিকা থেকেই কিছু কিছু খাবার(Food) খেতে হবে। প্রতিবেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশী খেতে হবে। গভর্বতী মাকে বেশী করে পানি(Water) খেতে হবে। আয়োডিনযুক্ত লবণ তরকারীর সাথে খেতে হবে। তবে অতিরক্ত লবণ (Salt)খাওয়া যাবে না।

গর্ভবতী(Pregnant) মাকে অন্তত পাঁচবার চিকিৎসক দেখানো দরকার। প্রথম তিন মাসে একবার, ২৮ সপ্তাহে একবার, ৩৬ সপ্তাহে একবার এবং তারপর প্রতি সপ্তাহে একবার করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। গর্ভবতী মহিলাকে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। গর্ভবতী মহিলাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাকে নিয়মিত গোসল(Bath)ও করতে হবে। দুপুরের খাবারের পর কমপক্ষে ১-২ ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

শিশুর গায়ে পাউডার

শিশুর গায়ে পাউডার লাগান? তাহলে শুনুন

ধীরে ধীরে গ্রীষ্মের মৌসুম আসতে চলেছে এবং সবারই এই নিয়ে অনেক সমস্যা হয় কিন্তু সবচেয়ে ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *