Home / চুলের যত্ন / চুল কেন পড়ে? চুল পড়া রোধে আপনার করণীয় কী?

চুল কেন পড়ে? চুল পড়া রোধে আপনার করণীয় কী?

চুল(Hair) পড়বেই এটা স্বাভাবিক। যার জন্ম আছে তার মৃত্যু আছে। আমাদের চুল সাধারণত ১ হাজার ১শত ১০ দিন বাঁচে। তারপর মারা যায়। আমরা যদি মাথার চুল দিয়ে শুরু করি। আমাদের মাথায় গড়ে ১ লক্ষ চুল(Hair) আছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ চুল গজায় এবং ১০০ থেকে ১৫০ চুল পড়ে যায়। এটা নরমাল।

ডক্টর টিভির আয়োজনে গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞ ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল এ বিষয়ে দিয়েছেন নানা পরামর্শ।

ডা. রুবাইয়া আলীর উপস্থাপনায় আয়োজিত ওই টকশোতে বলা হয়, অ্যাবনরমাল চুল পড়াতেও অনেকের সচেতনতা থাকে না যে তাদের অ্যাবনরমাল চুল পড়ছে। যারা নরমাল চুল পড়া(Hair loss) নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন তাদের জন্য কিভাবে চুল পড়ে কিভাবে চুল পড়া রোধ করা যায়। চুল পড়াটা আসলেই নরমাল নাকি অ্যাবনরমাল। সেগুলো জানতে হবে।

চুল কেন পড়ে?
ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল বলেন, ছেলেদের চুল পড়াটা অ্যান্ড্রোজেনেটিক বা বংশগত। অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে হেয়ার স্টাইল করা। চুলে জেল দেয়া, আয়রণ করা কারলিং, পারলিং। এসব করলে ছেলেদের চুল পড়ে যায়। পুষ্টি এটা বিরাট ফ্যাক্টর এ যুগের ছেলেদের জন্য। আগে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সে চুল পড়া(Hair loss) নিয়ে আসতো। কিন্তু এখন টিনেজ ছেলেরা চুল পড়া নিয়ে আসছে। এর মূল কারণ হচ্ছে তারা অনেক বেশি ফাস্টফুড খায়।

ফাস্টফুডে প্রচুর ফ্যাট আছে, সুগার আছে। তারা কায়িক পরিশ্রম(Hard work) একেবারেই করে না। এটা যে ওদেরই দোষ দেবো সেটা না। আসলে খেলা মাঠই সেভাবে নেই। এখনতো সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আর শহরের যে সব সাপ্লাই পানি নদী থেকে তোলা হয়, সে পানিগুলোতে ক্লোরিন দেয়া থাকে। সেই ক্লোরিনযুক্ত পানিতে চুল পড়ে।

বাসা চেঞ্জ করলে অনেকে কমপ্লেইন করে যে, বাসা চেঞ্জ করার পর চুল পড়া(Hair loss) বেড়ে গেছে। আসলে কোনো বাড়ির ট্যাঙ্কিতে বেশি মাত্রায় ক্লোরিন বা ব্লিচিং পাউডার দেয়া থাকে তাহলে চুল পড়বে। মাথায় যদি কারও স্ক্রিন ডিজিজ হয়। বড়দের যেমন স্যভোরিক অ্যাক্সিমা, সুরায়াসিস এসব ডিজিজ হলে চুল পড়েযায়।

আগে ধারণা করা হতো যে, অ্যান্ড্রোজেনেটিক কারণে মহিলাদের চুল পড়ে না। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে যে, প্রায় ৫০% মহিলার চুল পড়ে এ কারণে।

ধুমপান(Smoking) বড় বড় রক্তনালীকে বন্ধ করে দেয়। আর চুলের গোড়ায় অতি সূক্ষ সূক্ষ রক্তনালী। ধুমপান করলে এই সূক্ষ রক্তনালীগুলো বন্ধ হয়ে যায়। চুলের পুষ্টি আসে রক্তের মাধ্যমে তাই রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে চুল পড়ে যাবে।

গ্রামের মহিলারা সাধারণত পুষ্টির অভাবে ভুগেন। আর শহরের মেয়েরা ডায়েট কন্ট্রোলের চেষ্টা করেন। এগুলো চুল পড়ার অন্যতম কারণ। ফাস্ট ফুড, সফট ড্রিংকস খাওয়াও অন্যতম কারণ চুলপড়ার। চুলের ম্যাক্সিমামটা হলো প্রোটিন। ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেড এবং পানি দিয়ে গঠিত।

শ্যাম্পু ঘন ঘন করলে চুল পড়ে। এটা কতটা সত্যি? চুলটা প্রোটিন দিয়ে তৈরি। আর শ্যাম্পু(Shampoo) অ্যালকালিক বা খার দিয়ে তৈরি। ক্ষার এবং প্রটিন একত্রিত হলে প্রটিন ভেঙে যায়। এতে চুল গোড়া থেকে ঠিক থাকবে কিন্তু সামনের অংশ ভেঙে ভেঙে পড়বে। প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে।

চুল পড়া রোধে করণীয় কী?
চুল পড়া(Hair loss) রোধে করণীয় প্রসঙ্গে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞ ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল বলেন, চুলের জন্য ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভিটামিনগুলো খুব দরকার এছাড়া ভিটামিন সি ও ডি খুব দরকার। অনেকে বলে ভিটামিন ই চুলের জন্য দরকার। কিন্তু ভিটামিন ই চুলের মধ্যে নেই বলেলেই চলে। সামান্য পরিমান ভিটামিন এ(Vitamin A) আছে। আগে মানুষ খেত কম। কিন্তু এখন মানুষ প্রচুর খায়। কিন্তু এ খাবারটা সুষম না। এ সুষম খাবারের অভাবে চুল পড়ে। প্রেগনেন্সি চুলের জন্য ভাল।

ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল বলেন, প্রেগনেন্সি অবস্থায় চুল পড়ে না। বাচ্চা জন্মের ৪ মাস পর থেকে মায়ের চুল পড়া শুরু হয় এবং বাচ্চা জন্মের ১৪ মাস পর্যন্ত মায়ের এ চুল পড়া(Hair loss) থাকে। অনেক মা বলেন যে, আমি ব্রেস্ট ফিড করাই না। আমার চুল পড়ে কেন? চুল পড়ার সঙ্গে ব্রেস্ট ফিডের কোনো সম্পর্ক নাই। প্রেগনেন্সির সময় হরমোনাল চেঞ্জের কারণে চুল পড়ে। চুলের ওর টর্চার হলো চুল পড়ার অন্যতম কারণ। আমাকে অনেক প্রশ্ন করে যে, চুলের যত্ন কিভাবে নেব? আমি বলি চুলে কোন যত্ন নাই। যত্ন নেবেন না।

তেল চুলের জন্য অপরিহার্য একসময় ধারণা করা হত। যে সমস্ত এলাকার লোক চুলে তেল(Oil) দেয় সেসমস্ত এলাকার লোকদের চুল পড়ার সংখ্যা অনেক কম। তেল চুলে প্রটেক্টর হিসেব কাজ করে। অর্থাৎ দেয়ালে রং করলে দেয়ালের সৌন্দর্য্য যেমন বৃদ্ধি পায়। তেমনি দেয়ালকে প্রটেক্ট করে।

কাজের বুয়া বা রিকশাওয়ালার মাথায় টাকের সংখ্যা খুব কম। তাদের সহজে চুল পড়ে না। কারণ তাদের কোন টেনশন নাই। তারা অনেক বেশি পরিশ্রমী এবং তারা মাথায় তেল দেয়।

থাইরয়েডের কারণে রুগির চুল পড়ে। আবার থাইরয়েডের চিকিৎসার জন্য যে ঔষধ দেয়া হয় সেটার কারণেও চুল পড়ে। মিনোক্সিডিল ও ফিনিস্টারেড এই দুটো হলো সরকারকর্তৃক স্বীকৃত। মিনোক্সিডিল দিলে চুল প্রচুর গজায়। ছেড়ে দিলে সে চুল গুলো আস্তে আস্তে পড়ে যায় । রোগীর ধারণা যে, তার সবচুল পড়ে যাচ্ছে। ব্যাপার টা তা না। যার চুল পড়া(Hair loss) রোগ তার চুল কমতেই থাকবে। মিনোক্সিডিল খুব নিরাপদ একটা ওষুধ। যা সারাজীবন ব্যবহার করা যায়। তবে এতে অনেকের মাথা চুলকায়। ড্রাই হয়ে যায়। মাথায় নিয়মিত তেল দিলে মিনোক্সিডিলের কারণে মাথায় যে ড্রাই ভাব তৈরি হয় তা থাকবে না।

Check Also

চুল

চুল অনুযায়ী হেয়ার প্যাক ব্যবহার

চৈত্রের খর আবহাওয়ায় চুল রুক্ষ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। ঝলমলে চুলের জন্য তাই বাড়তি যত্নও ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *