Home / বিউটি টিপস / যে ভুলগুলোর কারণে ত্বকে অকালেই বয়সের ছাপ দেখা দেয়

যে ভুলগুলোর কারণে ত্বকে অকালেই বয়সের ছাপ দেখা দেয়

জ্যামিতিক রেখার মত মুখে ভাজ আর রেখা দেখা যাচ্ছে, মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক! চোখের নিচের ভাজ, কপালের ভাজ, নাকের পাশ দিয়ে ভাজ! আচ্ছা, এত কিছু ব্যবহার করলাম, এত যত্ন নিলাম ত্বকের, তাহলে তাড়াতাড়ি বয়সের ছাপ(Ages impression) কীভাবে পড়লো? এমন প্রশ্ন আমি আমার বোন, বন্ধু অনেকের কাছেই শুনতে পাই। আমরা স্কিন(Skin) কেয়ারে সব স্টেপই মেনে চলছি, তারপরও মনের অজান্তে বা না জানার কারনে কিছু ভুলের জন্য কম বয়সেই বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক, কোন ভুলগুলোর কারনে অকালেই ত্বকে বয়সের ছাপ(Ages impression) দেখা দেয়!বয়সের ছাপ

যে ভুলগুলোর কারণে ত্বকে অকালেই বয়সের ছাপ দেখা দেয়

রেগুলার লাইফে কোন ভুলগুলো আর্লি এজিং সাইনের জন্য দায়ী?
অকালেই বয়সের ছাপ স্কিনে ভিসিবল হওয়ার পেছনে বেশ কিছু ফ্যাক্টর দায়ী। আমরা প্রতিদিনই হয়তো না বুঝে ভুলগুলো করে যাচ্ছি। টিনেজ থেকেই যদি সেই ভুলগুলো সম্পর্কে হুশিয়ার থাকা যায়, তাহলে অকালে বয়সের ছাপ(Ages impression) ফেইসে ভিজিবল হবে না। সেইসাথে যাদের এজিং সাইন এসে গেছে অলরেডি, তাদেরও সেইসব ভুল শুধরে নেওয়া উচিত।

(১) সানস্ক্রিন ব্যবহারে ভুল
স্কিন কেয়ারের সব স্টেপই মেনে চলছেন আর সানস্ক্রিনও(Sunscreen) অ্যাপ্লাই করেন রোদে বের হলে। কিন্তু বাসায় থাকলে কি অ্যাপ্লাই করা হয়? বাসায় থাকলে অনেকেই আমরা সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করি না। দেখা যায়, রান্না করার সময় আগুনের তাপ আমাদের ত্বকে লাগছে, তা থেকেও আমাদের ত্বক(Skin) ড্যামেজ হয়ে থাকে। সূর্যের তাপ বা যে কোন হিট সোর্স ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন দিন দিন কমিয়ে আনে। ফলে বয়সের ছাপ(Ages impression) পড়তে শুরু করে। আবার দেখা যায়, সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করে সারাদিন আর রিঅ্যাপ্লাই করা হচ্ছে না। এতে কিন্তু আপনার ত্বক(Skin) সুরক্ষিত থাকলো না!

বাসায় হোক বা বাহিরে থাকা হোক, সানস্ক্রিন ৩-৪ ঘণ্টা পর পর রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে। সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় আমাদের মাথায় রাখা উচিত, তা হচ্ছে এসপিএফ (SPF)। বাসায় থাকলে এসপিএফ ১৫ থেকে ৩০ হলেও চলবে, কিন্তু বাসার বাহিরে রোদে থাকলে এসপিএফ অবশ্যই ৩০ এর উপর হতে হবে, ৫০ হলে তো খুবই ভালো এবং অবশ্যই রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে নির্দিষ্ট সময় পর পর। আর টিনেজ থেকেই সানস্ক্রিন(Sunscreen) ব্যবহার করতে হবে যাতে অকালে ত্বকে রিঙ্কেল বা ফাইন লাইনস না চলে আসে।

(২) ঠিকমত ফেইস ক্লিন না করলে বা ওভার ওয়াশ করলে
বাহির থেকে বাসায় আসার পর অনেকেই আমরা অলসতার কারণে ফেইস ঠিকমত ক্লিন করি না। শুধু ফেইস ওয়াশ(Face wash) দিয়ে ফেইস ক্লিন করলে ফেইস ডিপলি ক্লিন হয় না। সানস্ক্রিন বার বার রিঅ্যাপ্লাই বা মেকআপ, যাই হোক না কেন তা প্রোপারলি ক্লিন করা জরুরী। ডাবল ক্লিনজিং(Double cleansing) করতেই হবে। এছাড়া বাসায় থাকলেও সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এবং ঘুমাতে যাবার পূর্বে অবশ্যই স্কিন ক্লিন করতে হবে। আমরা অনেকেই বার বার ফেইস ক্লিন করি, এতে ত্বক তার ন্যাচালার অয়েল ও ময়েশ্চার হারিয়ে ফেলে। এর ফলেও কিন্তু বয়সের ছাপ(Ages impression) তাড়াতাড়ি পড়ে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে ভালোমানের ফেইস ওয়াশ ও অয়েল ক্লেঞ্জার বাছাই করা উচিত।

(৩) অতিরিক্ত মেকআপ
অতিরিক্ত মেকআপ(Makeup) প্রোডাক্টের ব্যবহার স্কিনে বয়সের ছাপ দ্রুত পড়ার একটি কারন। হ্যাঁ, একদম ঠিক পড়েছেন। মেকআপ তো করবেন, কিন্তু একটু বুঝে শুনে! আমাদের ফেইসের উপর যখন জোরে জোরে ব্রাশ ঘষা হয়, এটা কিন্তু স্কিনের টিস্যুর উপর ইমপ্যাক্ট ফেলে। আর আমাদের স্কিনের উপর প্রতিদিনই যদি ব্রাশ দিয়ে ঘষা হয়, তাহলে স্কিনের ইলাস্টিসিটি লুজ হয়ে ত্বক(Skin) ড্যামেজ হতে থাকে, ফলে দ্রুত চোখের নিচে রিঙ্কেলস, ফাইন লাইন্স পড়ে যায়। তাই যাদের প্রতিদিন মেকআপ করতে হয়, চেষ্টা করবেন সঠিক মেকআপ টুলস দিয়ে আর ফেইসের উপর বেশি প্রেশার না দিয়ে মেকআপ(Makeup) করতে। আর ভালোমানের প্রোডাক্ট ইউজ করতে হবে, এতে স্কিন ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে না। মেকআপ করুন কিন্তু ত্বককে একটু বিশ্রাম(Rest) দিন।

(৪) চোখের চারপাশের ত্বকে যত্ন নিতে অবহেলা করা
বয়সের ছাপ সর্বপ্রথম চোখে পড়ে যখন আই এরিয়াতে ভাজ পড়ে বা স্কিন কুঁচকে যায়। দেখা যায় ময়েশ্চারাইজার(Moisturizer) ব্যবহার করা হলেও চোখের নিচের পাতলা চামড়ার যত্ন আমাদের নেয়া হয় না। আর এই অবহেলার কারনেই চোখের এরিয়াতে এজিং সাইন আগে আসে। তাই টিনেজারদের উদ্দেশ্য করে বলছি, সপ্তাহে ২/৩ দিন শশা(Cucumber) বা আলু চিকন করে কেটে ১০ মিনিট রেখে দাও চোখে। যাদের অলরেডি কালো দাগ আর বলিরেখা পরতে শুরু করেছে যারা আই ক্রিম ইউজ করুন। আর প্রাপ্ত বয়স্করা সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। চোখের নিচের পাতলা চামড়ায় ধীরে ধীরে ম্যাসাজ(Massage) করুন হাতের আঙ্গুল দিয়ে।

(৫) ফেসিয়াল ম্যাসাজে ভুল
ফেসিয়াল(Facial) ম্যাসাজ করতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি, সেইটা ঘরে হোক বা পার্লারে গিয়ে। ম্যাসাজ ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন ইম্প্রুভ করে। ফেইসে ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম যা-ই অ্যাপ্লাই করুন না কেন, জোরে জোরে না ঘষে আসতে আসতে অ্যাপ্লাই করুন। আর ম্যাসাজের দিক সব সময় নিচের থেকে উপরের দিকে সার্কুলার মোশনে করতে হবে। কারণ ফেইস ম্যাসাজে গ্রাভিটিও কাজ করে। কম বয়সে আমাদের ত্বকের কোলাজেন আর স্বাভাবিক ইলাস্টিসিটির কারণে এই নিম্নমুখী টান অতটা প্রভাব ফেলে না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্কিন(Skin) লুজ হতে থাকে। তাই ম্যাসাজ নিচের থেকে উপরে করুন। চোখের নিচে রিং ফিংগার দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন স্কিন কেয়ারের সময় সঠিক নিয়মে ম্যাসাজ(Massage) করলে ত্বকের ফার্মনেস ঠিক থাকবে।

কেন তাড়াতাড়ি বয়সের ছাপ(Ages impression) আপনার ফেইসে পড়তে পারে সেটা বুঝলেন তো? স্কিন কেয়ারের সময় ভুলগুলো শুধরে নিন। খেয়াল রাখুন আপনার স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট যাতে আপনার স্কিন টাইপে স্যুইটেবল হয় এবং অথেনটিক যাতে হয়। সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং হেলদি ডায়েট চার্ট(Healthy diet chart) ফলো করুন। আর টিনেজারদের বলছি, এই বয়স থেকেই যদি তুমি স্কিন কেয়ার প্রোপার ওয়েতে করতে পারো, তাহলে অকালেই তোমার স্কিনে বয়সের ছাপ পড়বে না!

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

ত্বক

ত্বক ভালো রাখার জন্য ঘরোয়া স্ক্রাব

গরম তো এসেই গেল। প্রচণ্ড গরমে ত্বকের অত্যধিক সেবাম উৎপাদনের ফলে ত্বক (Skin) তৈলাক্ত হয়। ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *