Home / স্বাস্থ্য টিপস / ঠান্ডা ও সর্দি দূরে রাখার ৫টি উপায়

ঠান্ডা ও সর্দি দূরে রাখার ৫টি উপায়

আবহাওয়া বদলের বিষয়টি নিশ্চয়ই টের পাচ্ছেন। এর সঙ্গে ঠান্ডা ও সর্দির প্রকোপ বেড়ে যায়। ঠান্ডা লাগা ও সর্দি থেকে দূরে থাকতে আগে থেকেই সাবধান থাকতে হবে। অনেকের ধারণা, বেশিক্ষণ ঠান্ডায় থাকলে বা পানিতে ভিজলে ঠান্ডা লাগে, সর্দি হয়। যদিও এসব রোগের প্রধান কারণ ভাইরাস (Virus), তথাপি বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গেও এর সম্পর্ক রয়েছে।সর্দি

ঠান্ডা ও সর্দি দূরে রাখার ৫টি উপায়

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব এনজাইম আছে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রায় কম কার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (Immunity) দুর্বল হয়ে যায়। শীতে বাতাসের তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতাও কমে যায়, যা আমাদের শ্বাসনালির স্বাভাবিক কর্মপ্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে ভাইরাসের আক্রমণকে সহজ করে। ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশির শুরুতে গলা ব্যথা করে, গলায় খুসখুস ভাব দেখা দেয়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি ঝরতে থাকে এবং হাঁচি (Sneeze) আসে। ক্রমান্বয়ে মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। হালকা জ্বর ও শুকনা কাশিও হতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৫টি নিয়ম মানলে সর্দি-কাশি আপনার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না। জেনে নিন উপায়গুলো:

প্রচুর ভিটামিন ডি
গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ভিটামিন ডি এর অভাব হয়, তাদের সর্দি-কাশিতে কাবু করে বেশি। শরীরে ভিটামিন ডি (Vitamin D) থাকলে তা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। অনেক সময় শুধু খাবার থেকে যথেষ্ট ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত। এর বাইরে কিছুটা সময় সূর্যের আলোতে থাকা লাগতে পারে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে সপ্তাহে দুই দিন কেউ যদি অন্তত ৫ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যালোক গায়ে মাখে, তবে তা যথেষ্ট।

হাত পরিষ্কার রাখুন
আপনি অনেক সময় মুখে হাত দেন। ২০১৬ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, একজন ব্যক্তি প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ১৬ বার মুখে হাত দেন। মুখে হাত দেওয়ার পাশাপাশি হাতে অনেক জিনিস ধরা হয়। এতে হাত থেকে মুখে সহজেই ভাইরাস (Virus) যেতে পারে। সেখান থেকে মুখে বা শরীরে ভাইরাস যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তাই পরিষ্কার করে হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান ব্যবহার করে নিয়মিত হাত ধুয়ে নেবেন। তাহলে ঠান্ডা লাগা কমবে।

ফোন পরিষ্কার রাখুন
এখন প্রায় সবার হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে গেছে। একবার চিন্তা করে দেখুন, আপনার ফোন কোথায় কোথায় রাখেন। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা যায়, টয়লেট সিটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি জীবাণু (Germ) থাকে মোবাইল ফোনে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের পর্দায় থাকা এসব জীবাণু ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এসব জীবাণু থেকে সর্দি-কাশি হতে পারে। তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।

জিংক গ্রহণ করুন
শরীরে জিংকের ঘাটতি হলে ভাইরাসের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। তাই শরীরে জিংকের ঘাটতি হতে দেবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জিংক ট্যাব খেতে পারেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ মো. শরিফুল ইসলামের ভাষ্য, আমাদের শরীরে তিন শর বেশি এনজাইমের সঠিক পরিচালনের জন্য জিংক (Zinc) বা দস্তার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। প্রতিদিন আমাদের শরীরের জন্য ১৫ মিলিগ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। গরু ও ভেড়ার মাংসে উচ্চমাত্রায় জিংক রয়েছে। সামুদ্রিক মাছ, গরু-খাসির কলিজা, আটা-ময়দার রুটি, দুগ্ধজাত খাদ্য, শিমজাতীয় উদ্ভিদ, মসুর ডাল, চীনাবাদাম, মাশরুম (Mushroom), সয়াবিন ও ঝিনুকে জিংক পাওয়া যায়।

দই খান
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দরকারি কিছু ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) প্রয়োজন। ২০১৪ সালে ‘জার্নাল অব সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন ইন স্পোর্টস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, যেসব রাগবি খেলোয়াড় সম্পূরক খাবার হিসেবে প্রোবায়োটিক গ্রহণ করেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় কম সর্দি–কাশি ও পেটের সমস্যায় ভোগেন। এ ক্ষেত্রে দই দারুণ কার্যকর। প্রোবায়োটিকস গ্রহণকারীদের সর্দি-কাশি খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না বলেই গবেষণায় দেখা গেছে।

আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন।

Check Also

বেলের শরবত

ইফতারে বেলের শরবত পানের উপকারিতা

ইফতারে কোনো না কোনো শরবত তো থাকেই। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইফতারে কেমিক্যালযুক্ত শরবত খেতে ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *