Home / স্বাস্থ্য টিপস / স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কি সমস্যা হয়! বিয়ের আগে অবশ্যই জেনে নিন

স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কি সমস্যা হয়! বিয়ের আগে অবশ্যই জেনে নিন

বেশিরভাগ দম্পতিই জানতে চান স্বামী -স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কী সমস্যা হয়। রক্তের গ্রুপ(Blood group) একই হলে নাকি বাচ্চার জন্মগত সমস্যা হয়? প্রায় প্রতিদিন এই প্রশ্নটা অহরহ শুনে থাকেন চিকিৎসকরা। যুগান্তর পাঠকদের এই প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেডের গাইনি কনসালটেন্ট বেদৌরা শারমিন। স্বামী -স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ(Blood group) এক হলে কোনো সমস্যা হয় না বলে জানিয়েছেন সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেডের গাইনি কনসালটেন্ট বেদৌরা শারমিন।রক্তের গ্রুপ

স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কি সমস্যা হয়! বিয়ের আগে অবশ্যই জেনে নিন

বেদৌরা শারমিন যুগান্তরকে বলেন, অনেক দম্পতি আমাদের কাছে জানতে চান স্বামী -স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কী সমস্যা হয়। Blood group একই হলে নাকি বাচ্চার জন্মগত সমস্যা হয়? প্রায় প্রতিদিন এই প্রশ্নটা আমি রোগীদের কাছে শুনে থাকি। রক্তের গ্রুপ এক হলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে কিছু বিষয় রয়েই যায়। স্বামী -স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের বিষয়ে যুগান্তরের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেডের গাইনি কনসালটেন্ট বেদৌরা শারমিন।

রক্তের গ্রুপ: প্রথমেই রক্তের গ্রুপগুলো সম্পর্কে জেনে নিন। রক্তের গ্রুপের প্রধানত দুটি ভাগ। একটা হলো এবিও পদ্ধতি (এ, বি, এবি এবং ও) অন্যটা আরএইচ ফ্যাক্টর (আরএইচ পজেটিভ এবং আরএইচ নেগেটিভ)। এ রেসাস ফ্যাক্টরই ঠিক করে দেয় ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হবে না নেগেটিভ হবে। ব্লাড গ্রুপগুলো হলো :সএ পজেটিভ, এ নেগেটিভ, বি পজেটিভ, বি নেগেটিভ, এবি পজেটিভ, এবি নেগেটিভ, ও পজেটিভ এবং ও নেগেটিভ।

রক্ত গ্রহণে সচেতনতা
যখন কোনো নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে পজেটিভ গ্রুপের রক্ত দেয়া হয় তখন প্রথমবার সাধারণত কিছু হয় না। তবে এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে একটি এন্টিবডি তৈরি করে। যার ফলে রোগী আবার কখনও যদি পজেটিভ গ্রুপের রক্ত নেয়, তবে তার রক্তের কোষগুলো ভাঙতে শুরু করে। এ কারণে কাঁপুনি, জ্বর কিংবা কিডনি অকেজো থেকে শুরু করে মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। এ সমস্যাকে চিকিৎসাবিদ্যায় বলা হয় এবিও ইনকমপ্যাটিবিলিটি।

স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ
স্বামীর Blood group যদি পজেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর পজেটিভ হতে হবে। আর যদি স্বামীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর পজেটিভ বা নেগেটিভ যে কোনো একটি হলেই হবে। তবে স্বামীর গ্রুপ যদি পজেটিভ হয় তাহলে কোনোভাবেই স্ত্রীর রক্তের নেগেটিভ হওয়া চলবে না। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয় তাহলে তার স্বামীর Blood group নেগেটিভ হলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে।

স্বামীর রক্তের গ্রুপ স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ সন্তানের অবস্থান
পজিটিভ(+) পজেটিভ(+) সুস্থ সন্তান
নেগেটিভ (-) নেগেটিভ (-) সুস্থ সন্তান
নেগেটিভ (-) পজেটিভ (+) সুস্থ সন্তান
পজিটিভ (+) নেগেটিভ (-) প্রথম সন্তান সুস্থ, দ্বিতীয় থেকে সমস্যা

স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজেটিভ এবং স্ত্রীর নেগেটিভ হলে কী হতে পারে স্বামী-স্ত্রীর Blood group মিলে গেলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজেটিভ হয় তাহলে ‘লিথান জিন’ বা ‘মারণ জিন’ নাকে একটি জিন তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাধা দেয় বা জাইগোট মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হতে পারে। বাচ্চা হতে পারে জন্মান্ধ। এছাড়া যখন কোনো নেগেটিভ গ্রুপের মা পজেটিভ ফিটাস (ভ্রুণ) ধারণ করে তখন সাধারণত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু ডেলিভারির সময় পজেটিভ ভ্রুণের রক্ত, প্লাসেন্টারের (গর্ভফুল) বাধা ভেদ করে মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে। মায়ের শরীরেও প্রসবের সময় যে রক্ত প্রবেশ করবে, তা প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে আরএইচ এন্টিবডি তৈরি করবে।

যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবেন, তখন যদি তার ভ্রূণের ব্লাডগ্রুপ আবার পজেটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে আগে যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল সেটা প্লাসেন্টার বাধা ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন এটি ভ্রূণের শরীরে ঢুকবে তখন ভ্রূণের লোহিত রক্ত কনিকার সেল ভেঙে যাবে। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিদ্যায় বলা হয় আরএইচ ইনকমপ্যাটিবিলিট। আগে কখনও অপারেশন না হয়ে থাকলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে। শুধু সচেতন থাকতে হবে। স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হলে, বাচ্চা জন্মের পরপরই বাচ্চার ব্লাডগ্রুপ পরীক্ষা করতে হবে। যদি নেগেটিভ হয় মায়ের মতো, তবে কিছু করার দরকার হয় না। আর পজেটিভ হলে এন্টি ডি ইনজেকশন নিতে হবে ডেলিভারির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। আরও বিস্তারিত জানতে এবং বাচ্চা ধারণের আগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

হিটস্ট্রোক

তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোক এড়াবেন যেভাবে

গ্রীষ্মের দাবদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন অনেকেই। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে কিছু টিপস মেনে চলতে হবে। ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *