আমরা সাধারণত ফলের খোসা ফেলে দিয়ে শুধু ভেতরের অংশই খাই, তবে জানেন কি? অনেক ফলের খোসাতেও রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ (Nutritional value) যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অনেক ফলের খোসায় এমন উপাদান থাকে যা সরাসরি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity) বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে এবং ত্বক ও চুলের যত্নেও ভূমিকা রাখে। তাই ফল এর খোসা ফেলে না দিয়ে খোসাসহ খাওয়া উচিত। আসুন, জেনে নিই যে ফলগুলোর খোসাসহ খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
যেসব ফল খোসা সহ খাওয়া উচিত
১। আপেল
আপেলের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidant) থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া আপেলের খোসায় ভিটামিন সি, কে, এবং এ পাওয়া যায়, যা ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে। তাই আপেলের খোসা ফেলে না দিয়ে খোসাসহ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
২। শশা
শশার খোসায় রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা হজমের সমস্যা দূর করে এবং পেটের সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। তাই শশা (Cucumber) খাওয়ার সময় খোসা না ফেলে খোসাসহ খান।
৩। পেয়ারা
পেয়ারার খোসায় ভিটামিন সি এবং ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি। খোসাসহ পেয়ারা (Guava) খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায়। এটি হাড় এবং দাঁতের জন্যও উপকারী।
৪। আঙুর
আঙুরের খোসায় রেসভারেট্রল নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যানসার এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও আঙুরের খোসা খেলে ত্বক (Skin) সুস্থ থাকে এবং বার্ধক্যের ছাপ কমায়।
৫। প্লাম (বেরি জাতীয় ফল)
প্লামের খোসায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই (Vitamin E) থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। খোসাসহ প্লাম খেলে শরীর থেকে ফ্রি র্যাডিকেল দূর হয় এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
৬। কুমড়ো
কুমড়োর খোসায় বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা দৃষ্টিশক্তি (Eyesight) ভালো রাখতে সহায়ক। কুমড়োর খোসা ফেলে না দিয়ে খোসাসহ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং হাড়ের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৭। কিউই
কিউইয়ের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হজমের জন্য খুবই উপকারী। খোসাসহ কিউই খেলে হজমের সমস্যা কমে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৮। মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি থাকে, যা ত্বক এবং দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারী। খোসাসহ মিষ্টি আলু খেলে ফাইবারের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়, যা পেটের সমস্যাগুলো দূর করে।
৯। লেবু
লেবুর খোসায় ভিটামিন সি এবং ফাইবার থাকে যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। খোসা সহ লেবু (Lemon) খেলে শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল কমে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
১০। আম
আমের খোসায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। খোসাসহ আম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity) বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের সুস্থতা বজায় থাকে।
সতর্কতা: ফলের খোসায় অনেক সময় কিটনাশক বা রাসায়নিক পদার্থ থাকতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ফল খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেয়া উচিত।
ফলের খোসায় প্রায়শই সেই পুষ্টিগুলো থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, খোসা ফেলে না দিয়ে পরিষ্কার করে খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা আরও বেশি পাওয়া যায়।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।