বর্তমান সময়ে কম বয়সেই অনেকে হাঁটু ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষত, মহিলাদের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আর একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে সামান্য হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয়। ব্যথা-যন্ত্রণা জর্জরিত হয়ে আক্রান্ত অনেকে হাঁটা বন্ধ করে দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হাঁটলে কি সত্যিই হাঁটুর ব্যথা (Knee pain) বাড়ে, এ বিষয়ে চিকিৎসকদের মতামত জেনে নেওয়া যাক।
হাঁটলে কি বাড়তে পারে হাঁটুর ব্যথা
হাঁটলে কি হাঁটুর ব্যথা বাড়ে: চিকিৎসকরা জানান, আমাদের হাঁটুর দুই হাড়ের মধ্যে থাকে সাইনুভিয়াল ফ্লুইড। এ বার অনেক সময় এই তরলের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে হাড়ে হাড়ে ঘঁষা লাগে, খুব ব্যথা হয়। আর এই সমস্যার নামই হলো অস্টিওআর্থ্রাইটিস (Osteoarthritis)। সমস্যা হলো, এই রোগে ভুক্তভোগীদের অনেকেই মনে করেন হাঁটলে বুঝি ব্যথা বাড়তে পারে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং হাঁটু ব্যথা নিয়েই হাঁটতে হবে। তাতেই সুস্থ থাকবেন।
মেনে চলতে হবে যেসব নিয়ম: হাঁটুর ব্যথা নিয়ে হাঁটতে চাইলে সমতল জায়গায় হাঁটতে হবে। কোনও এবড়োখেবড়ো জায়গায় হাঁটলে সমস্যা বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা চেষ্টা করুন সিঁড়ি এড়িয়ে যাওয়ার। কারণ, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হাঁটুর ওপর চাপ বাড়বে। যার জন্য ব্যথা-বেদনা বাড়তে পারে। তাই আপনারা সিঁড়ি ভাঙবেন না। এই নিয়মটা মেনে চললেই হাঁটু ব্যথা (Knee pain) নিয়েও হাঁটতে পারবেন। কোনও সমস্যা হবে না।
যাদের হাঁটুতে ব্যথা নেই, তাদের দৈনিক ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে হাঁটু ব্যথা থাকলে এই নিয়মে হাঁটা চলবে না। সেক্ষেত্রে একবারে নয়, বারবারে হাঁটতে হবে। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত, প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। তাতেই ওজন কমবে। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিস (Diabetes), প্রেশার এবং কোলেস্টেরলও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও মিলবে একাধিক উপকার।
শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান: আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই হাঁটু ব্যথা শুরু হওয়ার অনেক দিন পর চিকিৎসকের কাছে যান। তখন আর কিছু করার থাকে না। অনেক সময় হাঁটু প্রতিস্থাপনেরও প্রয়োজন পড়ে। তবে রোগের প্রথম পর্যায়েই যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এতটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিছু ওষুধ খেলেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই হাঁটু ব্যথা শুরু হলে ফেলে রাখবেন না। বরং ঝটপট বিশেষজ্ঞের কাছে যান, তার পরামর্শ নিন। তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে সময় লাগবে না।
রোগ প্রতিরোধ জরুরি: আমাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিদিন শরীরচর্চা (Exercise) করেন না। এমনকী হেঁটেচলে বেড়ানোর অভ্যাসও খুব কম। যেই কারণে বাড়ছে হাঁটু ব্যথার প্রকোপ। তাই যাদের এখনও হাঁটু ব্যথা হয়নি, তারা প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটুন। দিনে মাত্র ৪৫ মিনিট হাঁটলেই এই সমস্যা থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। অন্যথায় হাঁটুর হাল বেহাল হয়ে যেতে পারে। এমনকী শরীরে বাসা বাধঁতে পারে একাধিক জটিল অসুখ। তাই আজ থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।