Home / স্বাস্থ্য টিপস / এই ১০টি মানসিক রোগের অন্তত ১টিতে আপনিও ভুগছেন

এই ১০টি মানসিক রোগের অন্তত ১টিতে আপনিও ভুগছেন

মনও অসুস্থ হতে পারে’-এক সময় এটা মানুষের ধারনার বাইরে ছিল। মানুষ এখন মনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে। মন(Mind) যে কোন কারণে অসুস্থ হতে পারে মানুষ তা এখন স্বীকার করছে। এর পুরোটাই সম্ভব হয়েছে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক রোগ(Mental illness) চিকিৎসার উন্নতির জন্য। অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার মতোই মানসিক রোগ নির্নয় করা হয় উপসর্গ অনুযায়ী।মানসিক রোগের

এই ১০টি মানসিক রোগের অন্তত ১টিতে আপনিও ভুগছেন

গায়েবি আওয়াজ শোনা, মনে মনে কথা বলা, যৌনইচ্ছা কমে যাওয়া, অতিরিক্ত যৌন ইচ্ছা(Sexual desire) ইত্যাদি উপসর্গও বিভিন্নি মানসিক রোগে লক্ষ্য করা যায়। আজ আমরা এমন ১০টি মানসিক রোগ(Mental illness) নিয়ে আলোচনা করবো যার অন্তত একটিতে আপনি ভুগছেন।

১. হঠাৎ রেগে যাওয়া
মারামারি ভাংচুর বা রাগ দেখানো অনেক মানসিক রোগের সাধারণ উপসর্গ। এসব মানসিক রোগের মধ্যে আছে বাইপোলার এ্যাফেকটিভ ডিস অর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া বিষণ্ণতা, ব্যক্তিত্বের সমস্যা ইত্যাদি। কিছু কিছু মানুষ পাওয়া যায় যারা এসব রোগে ভুগছেন না কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ খুব সাধারণ কারণে এমন রেগে যান যে আশপাশের সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারেন যে তার রেগে যাওয়াটা ঠিক স্বাভাবিক না কিন্তু তিনি নিজেকে কন্ট্রোল(Control) করতে পারেন না। এ মানসিক রোগকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা ইন্টারসিটেন্ট এক্সপ্রেসিভ ডিস অর্ডার বলে।

২. অ্যাংজাইটি নিউরোসিস
দুশ্চিন্তাবোধ, হাত-পা কাঁপা, মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া, বুকে চাপ লাগা, ঘন ঘন প্রসাব হওয়া, মাথাব্যথা হওয়া, হাত-পা কামড়ানো, ঘুম না হওয়া, ছটফট করা। ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে এই রোগের প্রকাশ পেতে পারে।

৩. অহেতুক ভয় বা ফোবিয়া
অঝথা কোন বিষয়ে ভয়, মৃত্যু ভয়, পোকামাকড়ের ভায়, লোকসমাজে আসার ভয়, বক্তৃতা দিতে ভয় পাওয়া ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে এই রোগ প্রকাশ পায়।

৪. অবসেশন
একই কাজ বারবার করা, একই চিন্তা বারবার করা, অনবরত হাত-পা ধোয়া, অতিরিক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা, সন্দেহবাতিকতা এবং মনের বিরুদ্ধে কথা বলা এই রোগের উপসর্গ।

৫. হিস্টিরিয়া বা মূর্ছারোগ
অর্গানিক কোন সমস্যা ছাড়াই হঠাৎ অজ্ঞান(Ignorance) হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি, দাঁতে দাঁত লাগা, এলোমেলো কথা বলা, হঠাৎ চোখে না দেখা, হাত-আপ অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে এই রোগ প্রকাশ পায়।

৬. সিজোফ্রেনিয়া
কানে গায়েবি আওয়াজ শোনা, একা একা কথা বলা, মনের কথা বাইরে প্রকাশ হয়ে যাওয়া, ঘরকুনো হয়ে থাকা, কাজ না করে অগোছালো থাকা, এলোমেলো ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি উপসর্গ সিজোফ্রেনিয়া রোগে প্রকাশ পেতে পারে।

৭. ম্যানিয়া
ঘন ঘন কথা বলা, অতিরিক্ত কথা বলা, অহেতুক আশ্বাস ও অহেতুক পরামর্শ(Advice) দেয়া, একসাথে অনেক কাজ হাতে নেয়া, এসব ম্যানিয়া রোগের উপসর্গ।

৮. ডিপ্রেশন
অশান্তি লাগা, কোন কাজে মন না বসা, অহেতুক কান্নাকাটি করা, আত্মহত্যা করার প্রবণতা কিংবা আত্মহত্যা করা, কোন কারণ ছাড়াই শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভব করা। ঘুম না হওয়া, আত্মবিশ্বাস(Confidence) কমে যাওয়া, ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে এই রোগ প্রকাশ পেতে পারে। এসব উপসর্গের বাইরেও আমাদের অর্থসামাজিক শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু কিছু নতুন উপসর্গ উদ্ভব হতে পারে।

৯. বাধ্যতা ধর্মী অসুস্থতা
এটা এক ধরনের মানসিক রোগ(Mental illness)। এ রোগে কিছু নির্দিষ্ট অস্বস্তিকর চিন্তা ব্যক্তির মনে ঘুরে ঘুরে বার বার আসে। এসব চিন্তা ব্যক্তির নিজের মনেই তৈরি হয়। ব্যক্তি এসব চিন্তা মন থেকে দূরে সরাতে চায় কিন্তু পারে না। চিন্তাগুলোকে ৫ ভাগে ভাগ করে বর্ণনা করা যায়। এগুলো হচ্ছে জীবাণু(Germ) দ্বারা সংক্রমণের চিন্তা, কোন একটা কাজ ঠিকমত করেও তা করা হয়নি এ ধরনের দ্বিধা, সব কিছু একটা নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে সাজানোর ইচ্ছা, কারো ক্ষতি করার ইচ্ছা, অস্বাভাবিক চিন্তা।

১০. শুচিবাই ও এ-সম্পর্কিত সমস্যাবলি
একই চিন্তা, কল্পনা, ছবি বারবার মনের মধ্যে আসতে থাকা কোনো যা কোনো ভাবেই থামানো যায় না, একই কাজ বারবার করতে থাকা- যেমন বারবার হাত ধোয়া, বার বার গুনতে থাকা, শারীরিক সৌন্দর্য(Physical beauty) বা গঠন নিয়ে ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ করা, অপ্রয়োজনীয় জিনিস অস্বাভাবিক ভাবে জমানো, বিনা কারণেই নিজের মাথার চুল ছিড়ে ফেলা, ঠোঁট-নখ বা অন্য কোনো স্থানের চামড়া কামড়ান বা চুলকানো বা অন্য কোনো ভাবে তা বারবার নষ্ট করা।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, শতকরা একভাগ অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রায় ১২ লাখ মানুষ সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত। তিন থেকে চারভাগ মানুষ ডিপ্রেশনে আক্রান্ত। এছাড়া শতকরা ৩০ ভাগ লোক কোন না কোনভাবে বিভিন্নি নিউরোটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছে। তবে এই রোগ যেহেতু বাস্তবতার সাথে ভারসাম্যহীনতা ও শরীরের কিছু হরমোন ও নিউরিটিক পরিবর্তনের ফলে হয়ে থাকে সেহেতু সঠিক সময়ে অত্যাধুনিক চিকিৎসায় এ রোগ পুরোপুরি ভাল হয়।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

হিটস্ট্রোক

তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোক এড়াবেন যেভাবে

গ্রীষ্মের দাবদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন অনেকেই। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে কিছু টিপস মেনে চলতে হবে। ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *