আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো ভ্যাজাইনাল ইচিং(Vaginal itching) থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে। ভ্যাজাইনাল ইচিং একটি সাধারণ যৌনাঙ্গের সমস্যা যা সাধারণত মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়। যৌনাঙ্গ(Genitals) সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার না করা হলে সেখানে ইনফেকশন দেখা দেয় এবং চুলকানি(Itching), জ্বালার সমস্যা বাড়ে। যোনির চারপাশের ত্বক বা অঞ্চলটি খুব সংবেদনশীল তাই এটি খুব সহজেই জ্বালা করে। ভ্যাজাইনাল ইচিং বা যোনিতে চুলকানি অত্যন্ত অস্বস্তিকর এবং বেদনাদায়ক, যার সঙ্গে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে।
ভ্যাজাইনাল ইচিং থেকে মুক্তি পেতে রইল কিছু ঘরোয়া প্রতিকার
এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন – যোনি শুষ্কতা বা রাসায়নিক(Chemical) জাতীয় কিছুর ব্যবহার বা রেজার ব্যবহার। তবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, এটি ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস বা যৌন(Sexual) সংক্রমণের মতো নির্দিষ্ট কিছুর কারণেও হতে পারে। তবে, এই চুলকানি বেশিরভাগই ইস্ট সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা ভাল। তবে, যোনির চারপাশের ত্বকের চারিদিকে সংক্রমণ(Infection) সহজেই ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
আপনি যদি এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে আপনি কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এখানে কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকার দেওয়া হল দেখে নিন সেগুলি –
১) এসেনশিয়াল অয়েল কিছু এসেনশিয়াল অয়েল(Essential Oil) ইনফেকশনের চিকিৎসার জন্য কার্যকর। টি ট্রি এবং ওরেগানো এই তেল আপনি যোনির চুলকানিতে ব্যবহার করতে পারেন। এদের অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যগুলি ইস্ট এবং ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। হাতে ২-৩ ফোঁটা তেল নিয়ে যোনির বাইরের ত্বকে লাগান।
২) প্রোবায়োটিক ফুড প্রোবায়োটিকযুক্ত খাবারগুলি স্বাস্থ্যকর ব্যাকটিরিয়ার বিকাশে সহায়তা করে এবং খারাপ সংক্রমণ(Infection) থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে। প্রোবায়োটিক খাবারগুলি যোনির পাশাপাশি অন্ত্রের জন্যও ভাল।
৩) নারকেল তেল নারকেল তেল(Coconut oil) শুধুমাত্র রান্না করার জন্যই নয়, ত্বকের জন্যও এটি অত্যন্ত উপকারি। ২০১৬ সালের একটি সমীক্ষায় অনুযায়ী, নারকেল তেল ইস্ট সংক্রমণের ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। তাই, কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে তা আপনার ত্বকে সঠিকভাবে মালিশ করুন।
৪) আপেল সিডায় ভিনেগার বেকিং সোডার মতোই, অ্যাপল সিডার ভিনেগার(Apple cider vinegar) দিয়ে স্নান করাও সংক্রমণ প্রশমিত করতে সহায়তা করতে পারে। এতে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি রোধ করে। স্নানের জলে আধা কাপ অ্যাপেল সিডায় ভিনেগার দিয়ে স্নান করুন।
৫) বেকিং সোডা(Baking soda) দিয়ে স্নান করলে ইস্ট সংক্রমণ এবং ত্বকের জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ২০১৩ সালের সমীক্ষা অনুসারে, বেকিং সোডায় অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা জ্বালাজনিত ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে পারে। স্নানের জলে ১/৪ কাপ বেকিং সোডা মেশান বা পেস্ট(Paste) তৈরি করুন এবং এটি ত্বকে লাগান।
৬) দই ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং দইয়ের প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্যগুলি যোনিতে ভাল ব্যাকটেরিয়ার(Bacteria) ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারে। একটি বাটিতে এক টেবিল চামচ দই(Yogurt) নিন, তুলো দিয়ে এটি যোনি অঞ্চলে লাগান। ১৫ মিনিট পর এটি সাধারণ জলে ধুয়ে ফেলুন।
৭) নিম ক) এক কাপ জলে এক মুঠো নিম পাতা ফুটিয়ে নিন। খ) ছেঁকে নিন এবং এটি ঠান্ডা হয়ে গেলে আপনার যোনি অঞ্চলটি এটি দিয়ে পরিষ্কার করুন। গ) নিমের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল(Anti-bacterial), অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এক্ষেত্রে দ্রুত ফলাফল আনতে পারে।
এক্ষেত্রে কখন ডাক্তার দেখাবেন?
যদি ইনফেকশন পাঁচ দিনের বেশি থাকে তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন। এছাড়া, প্রস্রাব বা যৌন মিলনের সময় ব্যাথা(Pain) অনুভব করলে, যৌনাঙ্গে ফোলা বা লালচে ভাব, দুর্গন্ধ ইত্যাদি কিছু হলেও ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করুন।
ভেজাইলান ইচিং কমানোর অন্যান্য উপায়
ক) নতুন রেজার ব্যবহার করুন।
খ) ঢিলে ঢালা পোশাক পরুন। আঁটসাঁট পোশাক অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং জ্বালা হতে পারে।
গ) যৌনাঙ্গ(Genitals) পরিষ্কার করতে সাবান ব্যবহার করবেন না। এটি স্বাস্থ্যকর ব্যাকটিরিয়াকে বাধা দিতে পারে।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।