Home / চুলের যত্ন / চুল পড়ে যাওয়ার ১০টি কারণ

চুল পড়ে যাওয়ার ১০টি কারণ

চুল (Hair) সহজে বাড়তে চায় না এবং ঝরে পড়ে দ্রুত- এমন অভিযোগ অনেকেরই। বিভিন্ন কারণে চুল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ঝরতে পারে। নির্দিষ্ট পুষ্টির অভাবে চুলের বৃদ্ধি আটকে যেতে পারে। আবার চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর পর আগা ছেঁটে ফেলাও জরুরি। চুলে চিরুনি দিলেই যদি চিরুনি ভর্তি চু`ল উঠে আসে তবে এর কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি। জেনে নিন কোন কোন কারণে চুল (Hair) পড়ে যায়।চুল

চুল পড়ে যাওয়ার ১০টি কারণ

১। অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়াবা বংশগত
অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়া জেনেটিক। এই অবস্থার পুরুষদের মাথার উপরের অংশ থেকে চুল কমে যেতে থাকে এবং আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত মাথার চুল (Hair) পাতলা হয়ে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই অবস্থা হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তবে বয়ঃসন্ধির পর যেকোনো সময়ে এটি শুরু হতে পারে। অনেক নারীদের মেনোপজের পরে এই অবস্থা দেখা দিতে পারে। হরমোন (Hormone) এতে ভূমিকা রাখে।

২। গর্ভকালীন বা গর্ভধারণ পরবর্তী সময়ে
গর্ভকালীন বা গর্ভধারণ পরবর্তী সময়ে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়। এই কারণে অতিরিক্ত চু`ল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের চুল পড়া (Hair fall) একটি অস্থায়ী অবস্থা এবং সাধারণত এক বছরের মধ্যে বা তার আগেই সমাধান হয়ে যায়।

৩। টেলোজেন ইফ্লুভিয়াম
স্বাস্থ্যকর চুলের ফলিকল বৃদ্ধির চারটি ধাপের মধ্য দিয়ে যায়। চুলের ফলিকল চুলকে ঠেলে দেয় এবং অ্যানাজেন পর্যায়ে এটি বৃদ্ধি পায়। ক্যাটাজেন পর্যায়ে চুলের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায় এবং টেলোজেন পর্যায়ে স্বাভাবিক চুল পড়া (Hair fall) শুরু হয়, এক্সোজেন পর্যায়ে বৃদ্ধি পায়। টেলোজেন এফ্লুভিয়াম হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে চু`ল চক্রের টেলোজেন পর্যায়ে থাকে। এর ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চু`ল পড়ে। টেলোজেন এফ্লুভিয়ামের কিছু সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে প্রসব, অস্ত্রোপচার, তীব্র মানসিক চাপ, দ্রুত ওজন হ্রাস, থাইরয়েড কিংবা নির্দিষ্ট ওষুধ।

টেলোজেন এফ্লুভিয়াম সাধারণত একটি অস্থায়ী অবস্থা যা সময়ের সাথে সাথে সমাধান হয়, তবে কারণ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এতে যদি ডাক্তার সন্দেহ করেন যে কোনও ওষুধ চুলের ক্ষতি করছে, তবে কম ডোজ বা ওষুধ পরিবর্তন করা সম্ভব হয়।

৪। অ্যানাজেন ইফ্লুভিয়াম
অ্যানাজেন ইফ্লুভিয়ামের কারণে চুলের চক্রের অ্যানাজেন (বৃদ্ধি) পর্যায়ে প্রচুর পরিমাণে চুল দ্রুত পড়ে যায়। এর কারণে মাথার পাশাপাশি ভ্রু এবং চোখের পাপড়িসহ শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে চুল পড়ে যেতে পারে। অ্যানাজেন ইফ্লুভিয়ামের সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি বিকিরণ থেরাপি, ছত্রাক (Fungus) সংক্রমণ কিংবা নির্দিষ্ট রোগ।

৫। অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা
অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা হলো একটি অটোইমিউন অবস্থা যার কারণে হঠাৎ করে চু`ল পড়ে যায়। ইমিউন সিস্টেম শরীরের অন্যান্য সুস্থ অংশের সাথে চুলের ফলিকলকে আক্রমণ করে। মাথার ত্বকের চুল, ভ্রু এবং চোখের পাপড়ি পড়ে যেতে পারে এই অবস্থার কারণে।

৬। ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়া
ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়া হলো টাইট করে চুল বাঁধার কারণে চু`ল পড়া (Hair fall) । অতিরিক্ত টেনে বাঁধার কারণে চু`ল ভেঙে যায় এবং আলগা হয়ে যায়। টাইট বান বা পনিটেল বা এক্সটেনশনের কারণে এমন অবস্থা হতে পারে।

৭। ওষুধ
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়ে যেতে পারে। এই জাতীয় ওষুধের উদাহরণগুলোড় মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট ধরনের ব্রণের ওষুধ, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, বিটা-ব্লকার, কোলেস্টেরল (Cholesterol) কমানোর ওষুধ, হরমোনযুক্ত ওষুধ বা থাইরয়েডের ওষুধ।

৮। জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার চু`ল পড়ার কারণ হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে। জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল (Birth control pill) খেতে চাইলে এমন ধরন বেছে নেওয়া জরুরি যার কম অ্যান্ড্রোজেন সূচক রয়েছে। এটি চুল পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য রূপ যা হরমোনগুলোকে প্রভাবিত করে, যেমন ইমপ্লান্ট চু`ল পড়ার কারণ হতে পারে। আমেরিকান হেয়ার লস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, যাদের জেনেটিক চুল পড়ার ঝুঁকি বেশি তাদের নন-হরমোনাল ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বেছে নেওয়া উচিত।

৯। পুষ্টির ঘাটতি
বায়োটিনের অপর্যাপ্ত মাত্রার কারণে চুল ভেঙে যায় এবং ঝরে পড়ে। আপনি যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি (Vegetable) না খান, তবে শরীরের জন্য আয়রন শোষণ করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। আয়রনের ঘাটতি চুল পড়ার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে বা সম্পূরক গ্রহণ করে কমাতে পারেন চুল পড়ার হার।

১০। দাদ
রিংওয়ার্ম বা দাদ একটি ছত্রাক সংক্রমণ যা চু`ল পড়ার কারণ হতে পারে। টিনিয়া ক্যাপিটিস হলো মাথার ত্বকে দাদ যা চুল (Hair) পড়ার অস্থায়ী কারণ। এর সম্ভাব্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মাথার ত্বকে বা ত্বকে আঁশযুক্ত এবং বিবর্ণ রিংয়ের মতো ছোপ, ফোসকা বা চুলকানি, ভঙ্গুর চু`ল।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

চুল পড়া

চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া ৭টি উপায় জেনে নিন

চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া ৭টি উপায়। মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়লে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে যত্ন নিতে পারেন ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *