Home / ত্বকের যত্ন / শীতে ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে যা করবেন

শীতে ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে যা করবেন

শীতকাল মানেই ত্বকের সমস্যা। বিশেষ করে শীতের ঠান্ডা শুকনো বাতাসে সবারই ঠোঁট (Lip) শুষ্ক হয়ে পড়ে। শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁট শুধু প্রাণবন্ত হাসির অন্তরায় নয়, শুষ্ক ঠোঁট যন্ত্রণাও দিতে পারে- বিশেষ করে ঠোঁট ফেটে গেলে ও রক্তক্ষরণ হলে। তাই ঠোঁটের অতিরিক্ত যত্ন জরুরি। আগেভাগে একটু সচেতন হলে সহজেই ঠেকাতে পারবেন শীতে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার এই সমস্যাকে।ঠোঁট ফাটা

শীতে ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে যা করবেন

 

ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে অনেকেই চ্যাপস্টিক (Chapstick) আর লিপবাম ব্যবহার করেন। এসব উপাদান হয়তো সাময়িক স্বস্তি দেয়, তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। লিপবাম বা চ্যাপস্টিকের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক উপায়ে ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে পারেন। জেনে নিন তেমন কিছু উপায়।

১। ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে দীর্ঘদিন ধরেই নারকেল তেলের ব্যবহার দেখা যায়। এতে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড (Fatty Acid) আছে, যা ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে। ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে নিয়মিত নারকেল তেল লাগাতে পারেন।

২। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি অ্যালোভেরার রস (Aloe vera juice) ঠোঁটে লাগাতে পারেন। অ্যালোভেরা খুব সহজলভ্য। বাসার ছাদের টবে এই গাছ লাগানো যায়।

৩। এক ফোঁটা ঘি ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। এটি শুষ্কতা কমিয়ে ঠোঁট নরম রাখতে সাহায্য করবে।

৪। অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে পরিচিত। এতে যে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, তা ত্বকের শুষ্কতা দূর ও ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে পারে। দিনে দুবার ঠোঁটে অলিভ অয়েল (Olive oil) মাখলে ঠোঁট নরম ও মসৃণ হবে।

৫। টাটকা গোলাপের পাপড়ি নিয়ে কাঁচা দুধে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। তারপর সারা দিনে অন্তত তিনবার এটা ঠোঁটে লাগান। ঠোঁট হবে কোমল ও মসৃণ। গোলাপের পাপড়ি, দুধের সর বা মাখন ঠোঁটে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখলেও কালচে ভাব চলে যাবে।

৬। পানি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু জানেন কি, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেলে তা আপনার ঠোঁট নরম রাখতেও সাহায্য করবে। অনেক সময় ডিহাইড্রেশনের ফলে ‘ডার্ক লিপ্স’য়ের সমস্যা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি (Water) পান করুন। এতে করে ঠোঁটের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৭। ঠোঁট ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল ও সবজি (Vegetable) খেতে হবে। এতে ঠোঁটে আর্দ্রতা থাকবে। এ সময় ভিটামিন ‘সি’যুক্ত ফল লেবু, জাম্বুরা, কমলা বেশি করে খান।

৮। যতই লিপ বাম আর মাস্ক লাগান, ঠোঁটের ওপরে যদি মৃত কোষের আস্তরণ জমে থাকে, তা হলে বাম বা মাস্ক ঠোঁটের গভীরে ঢুকতে পারবে না। লিপ বাম যাতে তার কাজ ঠিকমতো করতে পারে, তার জন্য ঠোঁট নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করা জরুরি। দোকান থেকে কেনা লিপ স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন অথবা অলিভ অয়েল (Olive oil) আর চিনি মিশিয়ে নিজেই বানিয়ে নিন ঘরোয়া স্ক্রাব। হালকাভাবে এই মিশ্রণ দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করুন মাঝে মধ্যে। চিনি স্ক্র্যাবার হিসেবে কাজ করে এবং মৃত কোষ ঠোঁট থেকে তুলে ঠোঁটকে নরম করে তোলে।

৯। অনেকেই তাদের রুক্ষ ঠোঁট কিছুক্ষণ পর পর জিভ দিয়ে ভিজিয়ে থাকেন। কিন্তু নিমেষেই রুক্ষ ঠোঁটকে নরম করার এই সহজ উপায় আসলে ফাটা ঠোঁটের মূল কারণ। বারবার জিভ দিতে ঠোঁট ভিজালে ঠোঁট আরও ফেটে গিয়ে চামড়া উঠে যায়, রক্তও পড়তে পারে। তাই ঠোঁট নরম রাখতে হলে এই অভ্যাস ছাড়ুন।

১০। মেয়েরা নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন। ঠোঁটের ত্বকের ক্ষেত্রে যদি ভালো প্রসাধনী ব্যবহার না করেন তবে ঠোঁট শুকিয়ে গিয়ে তা ফেটে যায়। তাই ভালো কোনো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করুন। বিশেষ করে লিপস্টিক (Lipstick) ব্যবহার করতে সতর্ক হোন। এগুলো যেন বেশি শুষ্ক বা ম্যাট না হয়।

১১। ঠোঁটের চামড়া উঠলেও কখনোই টেনে তুলবেন না বা দাঁত দিয়ে কাটবেন না। এতে ঠোঁট ফাটার সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন।

Check Also

ত্বকের সুরক্ষায়

ত্বকের সুরক্ষায় রোদে বের হওয়ার আগে করণীয়

ত্বকের সুরক্ষায় রোদে বের হওয়ার আগে করণীয়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদের প্রচণ্ড ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *