Home / লাইফস্টাইল / জেনে নিন মনের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে যেসব জিনিস

জেনে নিন মনের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে যেসব জিনিস

ডেঙ্গি জ্বর হলে অথবা দুর্ঘটনায় চোট পেলে আমরা চিকিৎসকের(Doctor) কাছে যাই। কিন্তু যদি কোনও কারণে মন-মেজাজ খারাপ হয়, তা হলে মনের চিকিৎসকের(Psychiatrist) কাছে যাওয়ার কথা ভাবি ক’জন! আজ ‘ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ ডে’-তে মন ভাল রাখার শপথ নিতে অনুরোধ করলেন মনস্তত্ত্ববিদ মঞ্জুশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ও মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনলেন সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়।মনের

জেনে নিন মনের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে যেসব জিনিস

আমাদের জীবনযাপন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কাজে-অকাজে নানা কারণে সকলেই দৌড়াচ্ছি। আর এর ফলে বাড়ছে শরীর ও মনের চাপ(Stress)। বিশেষ করে অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে মানসিক ভারসাম্য নানা ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। মনের অসুখ হলে লুকিয়ে না রেখে চিকিৎসা করানো দরকার।

এই বিষয় নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে ‘ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেন্টাল হেল্‌থ’ ১৯৯২ সালে ১০ অক্টোবর দিনটিকে ‘ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ ডে’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। সেই থেকে প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের দেশেও এই দিনটি পালন করা হচ্ছে। এবারের মেন্টাল হেলথ ডে-র থিম হল ‘ইয়ং পিপল অ্যান্ড মেন্টাল হেল্‌থ ইন আ চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’।

ছোটদের মনের সমস্যা বাড়ছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( হু)-র এক পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মনের অসুখ বাড়ছে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনো ২০ শতাংশ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে মানসিক সমস্যা(Mental problem) দেখা যায়। ১৪ বছর বয়সের মধ্যে ৫০ শতাংশের এবং ২৪ বছর বয়সে ৭৫ শতাংশের মনের অসুখ ধরা পড়ে।

দেখা গিয়েছে, সত্তর শতাংশ ক্ষেত্রে ছোটরা ১৮ বছরের মধ্যে কোনও না কোনও সময় মানসিক সমস্যার শিকার হয়। বড়রা তা বুঝতে না পেরে বকাবকি আর মারধর করলে সমস্যা বেড়ে গিয়ে আত্মহনন পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। বিভিন্ন মনের অসুখের মধ্যে আছে অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন(Depression), ইটিং ডিসর্ডার, পারসোনালিটি ডিসর্ডার, বাইপোলার ডিসর্ডার, স্ক্রিজোফেনিয়া ইত্যাদি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনের অসুখের উপসর্গ হিসেবে চুপচাপ বসে থাকা, চিৎকার চেঁচামেচি, জিনিসপত্র ভাঙচুর, মারধর আত্মহত্যার(Suicide) কথা বলা ও চেষ্টা করা ইত্যাদি দেখা যায়। এ রকম হলে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।

মনের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে ইন্টারনেট
বাবা-মা দু’জনেই ব্যস্ত, অন্য দিকে ছোট পরিবার বাড়িয়ে দিচ্ছে শিশুদের একাকিত্ব(Loneliness)। তাই বাচ্চাদের সময় কাটে ইন্টারনেট দুনিয়ায়।বাচ্চা থেকে বড় সকলের মনের অসুখের এটি এক অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে বাস্তবকে মেলাতে না পারায় সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।এর থেকে বার করার দায়িত্ব অবশ্যই বাবা-মা-সহ কাছের মানুষদের। একই সঙ্গে স্কুলেরও একটা দায়িত্ব আছে। তবে সবার আগে সচেতন(Conscious) হতে হবে বাড়ির মানুষদের। বাবা-মা নিজেরাই যদি ইন্টারনেটে আসক্ত হন, বাচ্চাকে সময় দেবেন কী ভাবে! কাছের মানুষদের সঙ্গ না পেলে বাচ্চাদের সমস্যা হবেই। শিশু থেকে বয়স্ক সকলেরই মনের অসুখের পেছনে একাকীত্ব একটা বড় কারণ।

আপনি আচরি ধর্ম
ছোটদের মধ্যে অসহিষ্ণুতা(Intolerance) ক্রমশ বাড়ছে। তাই প্রতি দিনই বাবা-মা-বন্ধুদের সঙ্গে ঝামেলা, এমনকী সহপাঠীদের মেরে ফেলার মতো ঘটনাও ক্রমশ বাড়ছে। এর জন্য কিন্তু বড়দের ভুমিকা নেহাত কম নয়। বিশেষ করে ছোট থেকে বাবা-মাকে যেমন আচরন করতে দেখে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের আচরণে তার ছাপ পড়ে। বেশির ভাগ মা তাঁদের বাচ্চাকে টিফিনের ভাগ দিতে বারণ করেন। অথচ বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন(Tiffin) ভাগ করে খাওয়ার মধ্যে অন্যের সঙ্গে মানিয়ে চলার সূত্রপাত। এমনকী, কোনও সহপাঠী যদি তাঁর থেকে এক-দু’নম্বর বেশি পায় তাই নিয়েও অনেক মা-বাবা তুলনা করে বাচ্চাটিকে হেয় করেন। এর থেকে বাচ্চাদের মনে হিংসার সৃষ্টি হয়। মনে রাখতে হবে ক্লাসে কিন্তু সবাই ফার্স্ট হয় না। আর পড়াশোনা নিয়ে অতিরিক্ত চাপ দিলে পড়ার প্রতি বাচ্চার অনীহা(Reluctance) তৈরি হবে, এ কথাও বোঝা উচিত। বাচ্চাকে ভাল ব্যবহার শেখাতে হলে নিজেদেরও সকলের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা দরকার। ছোটদের সামনে কখনও সহকর্মী বা বসের নিন্দে অথবা আত্মীয়দের নিন্দা ও সমালোচনা(Criticism) করবেন না। সব থেকে বড় কথা ছোটদের সব সময় একটা নিয়মের মধ্যে বড় করে তোলা উচিত। যা চাইবে তাই করতে দিলে মনের সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

মানসিক সমস্যায় সহযোগিতা করুক কর্মপ্রতিষ্ঠানও
মনের অসুখ নিয়ে আগের থেকে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। এমনকী, হেলথ ইন্সিওরেন্সের তালিকাভুক্ত হয়েছে মানসিক অসুস্থতাও(Mental illness)। কিন্তু কাজের জায়গায় এই সাহায্য পাওয়া যায় না। আজকের যুগেও মানসিক সমস্যার কথা শুনলে চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। বিশেষ করে কর্পোরেট সংস্থার অনেক কর্মীকে বলতে শুন, জ্বর(Fever) হলে বা পা ভেঙে গেলে ছুটি নিতে পারি, কিন্তু কাউন্সেলিংয়ের জন্যে ছুটি পাওয়ার আবেদন বলাই যায় না। এই ধারণা বদলাতে না পারলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। একই ভুমিকা নিতে হবে স্কুলগুলিকেও। বাচ্চাদের কোনও মনের সমস্যা হলে বকাবকি বা শাস্তি না দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Check Also

মেঝেতে ঘুমানোর

গরমে মেঝেতে ঘুমানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা জানেন কী?

গরমে মেঝেতে ঘুমানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা জানেন কী? তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। এমন দিনে একটুর স্বস্তির ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *