আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো মাত্র ৭ দিনে কিভাবে আপনার ওজন(Weight) কমাতে পারেন সে সম্পর্কে। ওজন(Weight) ঠিক রাখতে আমাদের স্ট্রেসভরা জীবনে এখন কঠোর ডিটক্স ডায়েটিং এর চল বেড়েছে। ডায়েটে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর(Nutritious) খাবারের সংযোজন তো আছেই, সাথে টানতে হচ্ছে ক্যালরি(Calories) গ্রহণের উপর রাশ। এরই মধ্যে উঠে এসেছে লেমন ডিটক্স ডায়েটিং যা দিয়ে আপনি মাত্র সাতদিনেই নির্মেদ ও আকাঙ্খিত চেহারা পেতে পারেন।
লেমন ডিটক্স ডায়েটিং করে ওজন কমান মাত্র ৭ দিনে
লেমন ডিটক্স ডায়েটিং কি?
⇒ লেবুর ডিটক্স ডায়েটিং(Lemon Detox Diet) একটি বিশেষ ডায়েট যার নিয়মিত খাবারে সিংহভাগ লেবুর পরিমানে সমৃদ্ধ হয়। ১৯৪০এর দশকে স্ট্যানলি ব্যারো এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন।
⇒ এর আরেক নাম হলো মাস্টার ক্লিঞ্জার কারণ লেমনেড আপনার শরীরের কোষ থেকে বিষাক্ত টক্সিন(Toxic toxins) নিষ্কাশন করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা(Immunity) বৃদ্ধি করে আপনাকে ভেতর থেকে চাঙ্গা করে তোলে।
⇒ ফলে আপনি বাইরের অসুখ-বিসুখ মোকাবিলা করতে বাড়তি উৎসাহ পান। বস্তুত এটা একটা স্ট্রিক্ট ফাস্টিং ডায়েট(Diet) যেখানে আপনাকে পুরোপুরি লিকুইড এর উপর নির্ভর করেই দিনের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
⇒ ক্যালোরির ইনটেক কমানো এই ডায়েটের প্রধান লক্ষ।এই ডায়েট কোলন অঙ্গের উপকার করে। এটাকে এক্সট্রিম ডায়েট(Extreme diet) এই জন্য বলা হয় যে এই ডায়েট চলাকালীন আপনি কোনো সলিড ফুড নিতে পারবেন না। কিছুজন অবশ্য ডায়েটের শুরু ও শেষদিকে হালকা খাবার এড করে নেন।
লেবু কেন এটির মুখ্য উপাদান?
⇒ লেমন ডায়েটে লেবুর প্রধান একটা ভূমিকা রয়েছে। লেবু(Lemon) একটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক সাইট্রাস ফল যা শরীরে এসিড ও ক্ষার এর ভারসাম্য বজায় রাখে।
⇒ এর সাইট্রিক এসিড লিভার এর যত্ন নেয় ও ডিটক্সিফিকেশন করে। পাশাপাশি স্থূলতা কমায় ও ত্বকের জেল্লা ও বাড়ায়।
⇒ এই ডায়েটে প্রতিদিন ৬০০ক্যালোরি অব্দি সর্বোচ্চ গ্রহণ করা যায়। সেলিব্রেটি রাও তাদের ব্যস্ত জীবনে ফিট থাকতে এই ডায়েট(Diet) ফলো করে থাকেন।
⇒ লেবুতে ভরপুর ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, বি৬, বি৯, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, দস্তা, লোহা,ক্যালশিয়াম(Calcium), ফসফরাস ও কিছু পরিমানে কার্বোহাইড্রেট ও থাকে।
⇒ এতে থাকা অনেক এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি রাডিক্যাল বের করে দেয় এবং হৃদরোগ ও ক্যান্সার(Cancer) থেকে আগাম সুরক্ষা প্রদান করে।
লেমন ডিটক্স এর ধাপ গুলি:
⇒ লেমন ডিটক্সিং সাত দিন ব্যাপী চলা একটা সময়ব্যাপী প্রক্রিয়া।
⇒ এখানে লিকুইড এর উপরেই আপনাকে সাস্টেন করতে হয়।
⇒ তারপর আস্তে আস্তে নরমাল ডায়েটে ফেরত এনে ফ্যাট বার্ন করে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ফেরত আনা হয়।
⇒ এই সময় যদি আপনি পারছেন না এরকম মনে হয় তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ফ্রুট স্যালাড, কিনওয়া স্যালাড, স্প্রাউট, গ্রীন টি বা কিছু ভেজিস নিতে পারেন।
প্রথম ধাপ:
⇒ এই স্টেপে জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি বর্জন করতে হয়।
⇒ ফ্রায়েড ওয়েলি ফুড বা প্রসেসড ক্যান ফুড যাতে কোলেস্টেরল(Cholesterol) থাকে এরকম টক্সিক বস্তু দূরে সরিয়ে রাখতে হয়।
⇒ ব্রেকফাস্টে টক জাতীয় খাদ্য এবং লেমনেড বাড়াতে হয় এবং সাথে অল্প কার্বোহাইড্রেট থাকবে এরকম কিছু নিতে পারেন।
⇒ টোস্ট ভালো অপশন হতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপ:
⇒ এটা সবচেয়ে কঠিন ফেজ। এই পর্যায়ে শুধু ডিটক্স ডায়েট চলবে বা শরীরের শুদ্ধিকরন ধাপ বলা যেতে পারে এটিকে।
⇒ দিনে ৬ বার লেমনেড নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ:
⇒ রোজকার ডায়েটে সলিড ফুডের পুনঃপ্রবেশ। প্রথমে কম কম করে কঠিন খাবার খেতে হবে।
⇒ যেমন এক কাপ দই(Yogurt) ও সাথে কয়েকটা আমন্ড।
⇒ এরপর যুক্ত হতে পারে ভেজ স্যালাড বা স্যান্ডউইচ।
⇒ এইভাবে নর্মাল ডায়েট(Diet)ফিরিয়ে আনুন।
কিভাবে বানাবেন লেমনেড?
⇒ ফ্রেশ লেমন স্লাইস নিয়ে প্রেস করে তার জুস নিংড়ে রাখুন। এরপর তাতে মেপল সিরাপ, কেইন পেপার ও গরম জল এড করে ডিটক্স ড্রিংক রেডি করে ফেলুন।
⇒ স্বাদের জন্য খানিকটা মধু(Honey) দিতে পারেন ভালো লাগবে। এটি হজম শক্তি বাড়াবে। ম্যাপল সিরাপ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই লো এবং পেপার ডিটক্স উপাদানে ভর্তি।
উপকারিতা:
⇒ ওবেসিটি রিস্ক কমায়। মেটাবলিজম স্ট্রং করে ক্যালোরি(Calorie) বার্ন করে।
⇒ যারা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে পারেন না কিন্তু বিজি লাইফস্টাইল এ অভ্যস্ত তারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেই সুফল পাবেন।
⇒ দৈহিক শক্তি বাড়ায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা(Immunity) বৃদ্ধি করে।
⇒ আলস্য ভাব কাটে ও কোষ্টকাঠিন্য এর সমস্যা দূরীভূত হয়।
⇒ ত্বকের জৌলুস ফেরত আনে।দ্রুত ওজন(Weight) কমাতে সাহায্য করে।
⇒ শরীরে রেচন ও বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।অর্গান গুলোর ফিলট্রেশন ক্ষমতা বাড়ে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
⇒ দেখুন এই ডায়েট সবার জন্য নয়। নিজের স্পেসিফিক নিড জেনেই এই ডায়েট ফলো করা ভালো নাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
⇒ যদিও কম সময়ে দ্রুত ওজন(Weight) কমানোর দাওয়াই এটি তাও এর অনেক সাইড এফেক্ট আছে। যেমন – বমিবমি ভাব, ঝিমুনি, দুর্বলতা,মাথাঘোরা ও ক্লান্তি।
⇒ পেশির পুষ্টি কমে যায় ফাইবার এর অনুপস্থিতিতে। ফলে পেশিক্লান্তি আসতে পারে।
⇒ ডায়েটিং পিরিয়ড এ শারীরিক ধকল নেয়া যাবেনা। বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থেকে বিশ্রাম(Rest) নিতে হয়। যা খুবই অযৌক্তিক ।
⇒ উপবাসের ফলে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ কমে যায়। এনার্জি(Energy) লেভেল ডাউন থাকে।
⇒ শুরু করার আগে ফিজিসিয়ান এর সাথে পরামর্শ মাস্ট।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।