Home / বিউটি টিপস / ঠান্ডায় ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

ঠান্ডায় ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

শীতের ঠান্ডা আমেজ শুরু হয়েছে চারদিকে। কমেছে বাতাসের আর্দ্রতা। এই সময়ে ত্বকের পাশাপাশি ঠোঁটও শুষ্ক হয়। ফলে ঠোঁট (Lip) ফাটে। শীতে ত্বকের চেয়েও বেশি রুক্ষ হয়ে ওঠে ঠোঁট। শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁট শুধু প্রাণবন্ত হাসির অন্তরায়। কখনো কখনো যন্ত্রণা কারণও। কেননা, কারও কারও ঠোঁট (Lips) ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। কিছু নিয়ম মেনে চললে মুক্তি পেতে পারেন এই সমস্যা থেকে। জেনে নিন এই সমস্যার ঘরোয়া উপায়।ঠোঁট ফাটা

ঠান্ডায় ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

১। অ্যালোভেরা
ভেষজ অ্যালোভেরা (Aloe vera) ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটে না। এর রস ঠোঁটে লাগালে শুষ্ক ঠোঁট হয় প্রাণবন্ত। অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকে ঠান্ডাভাবও বজায় রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা (Aloe vera) পাতা কেটে নিয়ে তার ভিতরে থাকা জেল বের করে একটি পাত্রে রাখতে হবে। ওই জেল রাতে ঘুমাতো যাওয়ার আগে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। একটি পাত্রে ওই জেল ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিন রাতেই এটা ব্যবহার করলে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে।

২। মধু
মধু খুবই ভালো অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াজাত পদার্থ এবং ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি (Petroleum jelly) ত্বককে কোমল করতে সাহায্য করে, ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রোধ করে। এই দুটো জিনিস যদি একসঙ্গে ঠোঁটে ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা ঠোঁটের জন্য উপকারীও হবে আবার ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকেও রেহাই মিলবে। মধু প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। আর ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ঠোঁট নরম রাখতে অনেকেই ব্যবহার করেন। আসলে এই দুটি উপাদানই প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজারের কাজ করে। ফাটা ঠোঁটের জন্য বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন এই চটজলদি সমাধান। প্রথমে ঠোঁটে মধু (Honey) লাগিয়ে নিন। একটা পাতলা স্তর বা আস্তরণ তৈরি হবে। তার উপর দিয়ে ভেসলিনের একটা স্তর তৈরি করুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট এই দুই উপাদান ফাটা ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে হবে। এবার টিস্যু বা পাতলা কাপড়ের সাহায্যে ঠোঁটের ওই আস্তরণ তুলে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে এই দুই উপাদান ঠোঁটে লাগান। এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার ফাটা ঠোঁটের সমস্যার ম্যাজিকের মতো সমাধান হবে। এছাড়া মধু ও গ্লিসারিনের পেস্ট বানিয়ে ঠোঁটে লাগান। নরম ঠোঁট পাবেন।

৩। নারিকেল তেল
ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে দীর্ঘদিন ধরেই নারিকেল তেলের ব্যবহার রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড (Fatty Acids) আছে। যা ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে। নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই ঠোঁটকে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচাতে নিয়মিত ঠোঁটে নারকেল তেল ব্যবহার করুন। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যারিয়ার অয়েল (Carrier oil) প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজারের কাজ করে। এগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা ত্বককে আর্দ্র করে। ঠোঁটকে নরম ও কোমল করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে টিট্রি অয়েল বা গ্রাপিসড অয়েল যোগ করে নেওয়া যায়। যা ফাটা ঠোঁটের উপকার করবে। ফাটা ঠোঁট থেকে অনেক সময় সংক্রমণের ভয় থাকে। এসব প্রাকৃতিক তেল সেই সব সংক্রমণকেও রোধ করতে পারে।

৪। ঘি
ঘি সবচেয়ে সহজ উপায়ে দ্রুত ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে। একদিন চার ঘণ্টা পরপর কয়েকবার ঠোঁটে ঘি ব্যবহার করুন। কয়েক ফোঁটা ঘি আপনার ত্বকে মালিশ করুন। কয়েক মিনিট ধরে মালিশ করতে থাকলে তা ত্বকের ওপর একধরনের সুরক্ষা আবরণ তৈরি করবে, যা ত্বক (Skin) শুষ্ক হওয়া ঠেকাতে পারবে। ঘি ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ই’ ও ‘কে’ সরবরাহ করে। ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল।

৫। চিনির স্ক্রাব
মরা কোষের কারণে ঠোঁট অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে চিনির স্ক্রাব আপনাকে সাহায্য করবে। মধুর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ঠোঁটে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে হালকা করে পেট্রোলিয়াম জেলি (Petroleum jelly) লাগান। সপ্তাহে অন্তত একদিন ঠোঁটে স্ক্রাবিং করুন।

৬। শসা
শুষ্ক এবং ফাটা ঠোঁটের সমস্যায় শসা ভালো প্রাকৃতিক ওষুধ। ত্বককে নরম এবং কোমল করে তুলতেও এর জুড়ি মেলা ভার। টুকরো করে কেটে নেওয়া ফ্রেশ শসা দুই থেকে তিন মিনিট ঠোঁটের উপর ঘষতে থাকুন। কিছুক্ষণ পরে আগে থেকে তৈরি করে রাখা শসার রস (Cucumber juice) ঠোঁটে লাগিয়ে রেখে দিন অন্তত ১০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। শসার রস না লাগিয়ে শসা চটকে নিয়ে প্যাক তৈরি করেও লাগাতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত একবার করে এই পদ্ধতি ব্যবহার করলেই দূর হবে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা।

৭। গ্রিন টি
গ্রিন টির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট (Anti-oxidant) উপাদান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ফাটা ঠোঁটের সমস্যার সমাধানে এটি অত্যন্ত জরুরি উপাদান। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও গ্রিন টি ব্যাগ অত্যন্ত উপকারী। একটি গ্রিন টি ব্যাগ এক কাপ গরম পানিতে কয়েক মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ওই টি ব্যাগটি সরাসরি ফাটা ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। কয়েক মিনিট রেখে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে এটা করতে পারেন।

৮। দুধ
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে দুধ খুবই উপকারী। প্রতিদিন ঠোঁটে দুধ ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই পদ্ধতিতে ঠোঁটের যত্ন নিলে ঠোঁট নরম ও উজ্জ্বল হবে। এছাড়া টাটকা গোলাপের পাপড়ি কাঁচা দুধে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন । এরপর দিনে অন্তত তিন বার করে এই পেস্ট ঠোঁটে লাগান । ঠোঁট (Lip) হবে কোমল ও মসৃণ ।

৯। গ্লিসারিন
প্রতিদিন গ্লিসারিন লাগালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা কখনোই হবে না। রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে গ্লিসারিন দিয়ে ম্যাসাজ করে ঘুমান। সকালে নিজেই এর ফলাফল দেখতে পারবেন।

১০। অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এতে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। যা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ঠোঁট ফাটা ঠেকায়। দিনে দু’বার ঠোঁটে অলিভ অয়েল (Olive oil) মাখলে ঠোঁট নরম ও মসৃণ হবে। শীতকালে অনেকেই পানি কম পান করেন। এর ফলে ত্বক ও ঠোঁটের আর্দ্রতা হারায়। প্রতিদিন অনন্ত দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন। শরীরে পানিশূন্যতা থাকলে ঠোঁট উজ্জ্বল দেখায় না।

আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন।

Check Also

মেকআপ

দ্রুত মেকআপ করার ৮টি সহজ পদ্ধতি

রমজানে পুরো মাসব্যাপী রোজা রাখার পর শরীর থাকে ক্লান্ত। এরপর আসে ঈদ। আর সেখানে কর্মব্যস্ত ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *