রুক্ষতা চুলের অন্যতম সাধারণ সমস্যা। আবহাওয়া, দূষণ, ও যত্নের অভাবে চুল(Hair) অকালেই হয়ে পড়তে পারে রুক্ষ ও মলিন। তবে নিয়মিত পরিচর্যা আর যত্ন পেলে অনায়াসেই চুল(Hair) ফিরে পাবে আগেকার জেল্লা। সংসার, অফিস, হাজারও ব্যস্ততা সামলে বারবার পার্লার যাওয়া সম্ভব নয়। তাতে প্রচুর অর্থের অপচয়ও হয়। ঘরে বসেই চুলে ফেরাতে পারেন প্রাণের পরশ! জেনে নিন তারই কয়েকটি উপায়। রুক্ষতা দূর করার ঘরোয়া উপায়।
চুলের রুক্ষতা দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
চুলের রুক্ষতাকে কাবু করা মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। চুল(Hair) পর্যাপ্ত পুষ্টি ও আর্দ্রতা পেলে সমস্যা নিজে নিজেই কমে যাবে। আমাদের রান্নাঘরে এমন প্রচুর উপাদান রয়েছে, যা রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী। তবে একবার ব্যবহার করেই সাংঘাতিক কোনও ফল আশা করবেন না। সবটাই নিয়ম আর যত্নের উপর। নিয়মিত যত্ন নিলে চুল(Hair) আবার কোমল ও নরম হয়ে উঠবে।
১. চুলের ড্যামেজ(Hair damage) কমাতে ডিম দারুণ উপকারী। অপরদিকে অলিভ অয়েল চুলে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই এই দুই উপাদান দিয়ে তৈরি প্যাক রুক্ষ চুলের জন্য আদর্শ। ১/৪ কাপ আমন্ড অয়েলের(Amanda oil) সঙ্গে ১টা কাঁচা ডিম ফেটিয়ে নিন। মিশ্রণ ভালভাবে মিশে গেলে তা স্ক্যাল্পসহ পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। ৪০ মিনিট পর এসএলএসমুক্ত কোনও শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল(Hair) ধুয়ে নিন।
২. অ্যাভোকাডোয় রয়েছে ভিটামিন বি ও ই-এর মতো প্রয়োজনীয় উপাদান যা চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভাল। ১টা পাকা অ্যাভোকাডোর বীজ বের করে ক্বাথ বের করে তাতে ১ কাপ টক দই মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে ৪০-৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার(Conditioner) ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন।
৩. ভিটামিন-ই চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি চুলের প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট(Anti-oxidant) থাকে যা ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে হওয়া ক্ষতির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। আর চুল(Hair) ভাল রাখতে নারকেল তেলের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। সুতরাং এই দুই উপাদান মিশিয়ে নিলেও পেয়ে যাবেন রুক্ষ চুলের মোক্ষম দাওয়াই। একভাগ ভিটামিন-ই অয়েলের সঙ্গে ৪ ভাগ নারকেল তেল(Coconut oil) মিশিয়ে এয়ারটাইট কন্টেনারে ভরে রেখে দিন। সপ্তাহে একবার বা দুবার চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী এই তেল স্ক্যাল্প ও চুলে মাসাজ করে ৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
৪. আমাদের অতি পরিচিত মেয়োনেজও কিন্তু রুক্ষ চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। ১/৪ কাপ মেয়োনেজ, ১/৩ কাপ অলিভ অয়েল(Olive oil) ও চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী একটা বা দুটো ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। পুরো চুলে এই মিশ্রণ লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখুন। আধঘন্টা রেখে শ্যাম্পু(Shampoo) করে নিন। এই মাস্ক শুধু রুক্ষতা দূর করতেই নয়, বরং চুলে জেল্লা আনতেও সাহায্য করবে।
৫. কন্ডিশনার হিসেবে কলা দারুণ কার্যকর। আর সঙ্গে যদি থাকে মধু(Honey), তাহলে তো কথাই নেই! রুক্ষতা নিমেষে দূর হবে। একটা পাকা কলার সঙ্গে দু চা চামচ মধু ও ১/৩ কাপ নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েল(Almond Oil) মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
৬. চুলের রুক্ষতাকে বাগে আনতে বিয়ার ব্যবহার করতে পারেন। বিয়ারে রয়েছে প্রোটিন(Protein) ও ভিটামিন বি যা কিউটিকলকে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুল(Hair) পরিষ্কার রাখে ও নরম করে তোলে। একটি বাটিতে বিয়ার ঢেলে সারারাত রেখে দিন। পরদিন শ্যাম্পু করে বিয়ার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। স্ক্যাল্প(Scalp) হালকা হাতে মাসাজ করে শেষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল(Hair) ধুয়ে নিন।
৭. চুলের রুক্ষতা দূর করার অন্যতম কার্যকর উপায় হট অয়েল মাসাজ। আমাদের ঘরেও একাধিক তেল থাকে, যা রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আপনার চুলে কোন ধরনের তেল সবথেকে বেশি কাজ করে, সেই অনুযায়ী একাধিক তেল মিশিয়ে চুলে মাসাজ করতে পারেন। যাদের চুল(Hair) পাতলা তারা হালকা তেল যেমন জোজোবা অয়েল বা আমন্ড অয়েল ও ঘন চুলের ক্ষেত্রে নারকেল তেল বা আর্গান অয়েল(Argan oil) মাসাজ করতে পারেন।
৮. প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক তেল মিশিয়ে সামান্য গরম করে নিন। মনে রাখবেন, খুব গরম করলে তেলের উপকারী উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই তেল স্ক্যাল্পে ১০-১৫ মিনিট হালকা হাতে সার্কুলার মোশনে মাসাজ করুন। এরপর গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে অতিরিক্ত পানি চেপে তা চুলে জড়িয়ে রাখুন। তোয়ালে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পদ্ধতি আবার অনুসরণ করুন। আধঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার(Conditioner) ব্যবহার করে নিন।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।